বিভাগের সম্পাদক:

আজ সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৮৮ সালের ২০ নভেম্বর চাঁদপুর জেলার পাইকদি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। প্রবীণ সাংবাদিক, সাহিত্যসেবী মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনের অল্প বয়সে বাবার মৃত্যু হওয়ায় সংসারের বোঝা তার ঘাড়ে চাপে। তিনি চাকরি করেন নরসিংহপুর স্টিমার ঘাটে সহকারী স্টেশনমাস্টার পদে। পরে ওরিয়েন্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করে প্রতিষ্ঠা করেন ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরি। এরপর সম্পাদনা করেন মাসিক সওগাত। জাতীয় কবি নজরুল ও কবি মঈনুদ্দীনও এ পত্রিকায় চাকরি করেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পথের সাথী নামে একটি কবিতাও সওগাতের দ্বিতীয় সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল। লিখতেন বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, মানকুমারী বসু (কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ভাইয়ের মেয়ে)।
বেগম রোকেয়ার কবিতা ছাপানো হয় প্রথম সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হওয়ার পর নাসির উদ্দীন ঢাকায় চলে আসেন। ছিল মাসিক সওগাত, সাপ্তাহিক সওগাত, শিশু সওগাত ও সাপ্তাহিক বেগম। ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সওগাত প্রথম বের হয়। সওগাতকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সাহিত্যিকদের আড্ডা। প্রবীণদের মধ্যে ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন, সুফিয়া কামাল ও মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা।
নবীনদের মধ্যে আবদুল গনি হাজারী, সরদার জয়েনউদ্দীন, কামরুল হাসান, মুস্তাফা নূর-উল ইসলাম, ফজলে লোহানী, শামসুর রাহমান, শহীদুল্লাহ কায়সার, আব্দুল্লাহ আল মুতী, ফয়েজ আহমদ, লায়লা সামাদ, ওমর আলী, আল মাহমুদ, হাসান হাফিজুর রহমান ছাড়াও অনেকে। ১৯৮৮ সালে তার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপিত হয়। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পান বিভিন্ন পুরস্কার।
যেমনÑ বাংলা একাডেমি সম্মাননা পুরস্কার, একুশে পদক, বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ ট্রাস্ট পুরস্কার, আবুল মনসুর সাহিত্য পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, শেরে বাংলা জাতীয় স্বর্ণপদক, বাংলা একাডেমি ফেলো, লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল পদক, ঢাকা সিটি করপোরেশন পদক, নজরুল ইনস্টিটিউটের নজরুল স্মৃতিপদক প্রভৃতি। ১৯৯৪ সালের ২১ মে মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ইন্তেকাল করেন। তিনি পিতামহ আসাদ উল্লাহর মতো দীর্ঘ ১০৭ বছর পৃথিবীর আলোতে ছিলেন।

এবি/টিআর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here