হাসান আকবর |

চীনের সাথে চট্টগ্রামের সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সোমবার চীন থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে আসা একটি মাদার ভ্যাসেল বন্দরের জেটিতে বার্থিং নেবে। পণ্য খালাস শেষে জাহাজটি আবার রপ্তানি পণ্য নিয়ে চীনের পথ ধরবে। চীন থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে জাহাজ চলাচল দুই দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে ঠিক কতদিন এই সার্ভিস চালু রাখা যায় তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশ্বের কারখানাখ্যাত চীনের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা–বাণিজ্য বিস্তৃত। প্রচুর মালামাল আমদানি করা হয় চীন থেকে। বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরের কাপড়সহ বিভিন্ন ধরনের এক্সেসরিজ আমদানি করা হয় ওই দেশ থেকে। অপরদিকে চীনে বাংলাদেশের চামড়াসহ বেশ কিছু জিনিস রপ্তানি হয়। তবে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি বিশাল। চীন থেকে বাংলাদেশ কোটি কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে। এসব পণ্য চীন থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা কলম্বো হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। মাদার ভ্যাসেলে চীন থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টে পৌঁছে পণ্য। ওখান থেকে চট্টগ্রাম–সিঙ্গাপুর কিংবা চট্টগ্রাম মালয়েশিয়া বা চট্টগ্রাম–কলম্বো রুটে চলাচলকারী ফিডার ভ্যাসেলে এসব পণ্য চট্টগ্রামে পৌঁছে। একইভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যও ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট ঘুরে চীনের বিভিন্ন বন্দরে পৌঁছে। এতে সময় এবং ব্যয় দুটিই বেশি হয়।

এই অবস্থায় সমুদ্রপথে কন্টেনার বোঝাই পণ্য পরিবহনে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল লাইনস (পিআইএল) চীন ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চালানো শুরু করেছে। আজ সোমবার সকালে এই কোম্পানির প্রথম জাহাজ হিসেবে এমভি কোটা আংগুন ভি কাজন ৯৩৫ টিইইউএস কন্টেনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩ নম্বর জেটিতে বার্থিং নেবে। চায়না–চিটাগাং এক্সপ্রেস (সিসিই) নামের এই সার্ভিসে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জাহাজের একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করা হয়েছে। সূত্র বলেছে, চীনের নিংবো থেকে যাত্রা করে সাংহাই এবং শেকাউ হয়ে এই রুটের জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রামে পৌঁছাবে। ফিরতি পথেও একইভাবে জাহাজটি চীনের বন্দরে নোঙর করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, সরাসরি জাহাজ চলাচল দুই দেশের বাণিজ্যের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সহজে পণ্য আনা–নেওয়ার সুযোগ দেশের ব্যবসা–বাণিজ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

চট্টগ্রামের শিপিং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন–চট্টগ্রাম রুটে সরাসরি জাহাজ পরিচালনা টাফ বিষয়। এত পণ্য পাওয়া যাবে কিনা এবং শেষ পর্যন্ত পণ্যের অভাবে জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখা যায় কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। তবে তিনি বলেন, রুটটি টিকিয়ে রাখা গেলে তা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here