চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, বায়েজিদ আংশিক) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৩ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য দিনক্ষণ ধরে এগুচ্ছে ইসি। চলতি সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তারা।

গত ৭ নভেম্বর সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ইসি। শূন্য ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচনী আইনে। চট্টগ্রাম সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটগ্রহণের জন্য পূর্বের সকল ভোটকেন্দ্র পর্যালোচনা করে দেখছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোটকেন্দ্র অনেকটা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ১৩ জানুয়ারিকে সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। প্রথমবারের মতো এই উপ-নির্বাচনে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান।

গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি রংপুর উপ-নির্বাচনেও ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।

বোয়ালখালী উপজেলা (শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন ছাড়া) ও নগরীর ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৭০টি ভোটকেন্দ্র ছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তা বহাল ছিল। উপ-নির্বাচনেও এসব ভোটকেন্দ্র থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকক্ষ ছিল ৮৫০টি। ভোটার সংখ্যা ছিল চার লাখ ৭৫ হাজার ৯৯৬ জন।

১৯৭৩ সালে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের (প্রয়াত) কফিল উদ্দিন খান বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ দলীয় কোনো প্রার্থী জয়লাভ করতে পারেননি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দীন খান বাদল। দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করেছেন প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মঈন উদ্দিন খান বাদল।

আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম বিএসসি এই আসন থেকে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ‘৯১ সালের বিএনপির সিরাজুল ইসলাম ও ‘৯৬ সালে বিএনপির প্রার্থী মোরশেদ খানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন তিনি।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ : জাসদ নেতা মঈন উদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। অনেকেই পোস্টার, ব্যানার ছাপিয়ে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই আনাচে-কানাচে পোস্টার, ব্যানারে ছেঁয়ে গেছে। নির্বাচনের আগেই যেন ভোটযুদ্ধ শুরু হয়েছে। উপ-নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের একাধিক ‘হেভিওয়েট নেতা’ মাঠে নেমে পড়েছেন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান বাদলের নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কুয়েতের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম, সাবেক মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি’র নামও সম্ভাব্য প্রার্থিতায় শোনা যাচ্ছে।

অংশ নেবে বিএনপি : আসন্ন উপ-নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান। উপ-নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেন জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here