দালালরা সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাদের বিদেশে পাঠায় তাদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মানুষ যাতে দালালদের মুখরোচক কথার ধোঁকাবাজিতে না পড়ে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। এভাবে কোথাও গিয়ে যেন অকালে কেউ হারিয়ে না যায়।’

রোববার (২৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি-২০১৬ এর অধীন গঠিত অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির ১ম সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকার গঠনের পর থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করার কাজ করে আসছি। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি, যাতে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনে বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে মানুষ বিদেশ যেতে পারে। বিদেশ যেতে দালালের খপ্পরে যাতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

‘আর তারা কোথায় কী কাজ করতে যাচ্ছেন, তার একটা খবর নেওয়া, যেন সঠিক কাজটা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা, যেখানে যে কাজে যাবে সেভাবে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, সে দেশের আইন-কানুন সম্পর্কে জানানো, এসব করার চেষ্টা আমরা করছি।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দালালরা সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখিয়ে শুধু বাইরে পাঠিয়েই দিচ্ছে। এরপরে সে কোথায় গেছে, সেই খবর কেউ জানেনা। মানুষ জমিজমা বিক্রি করে, সবকিছু বন্ধক রেখে দালালকে টাকা দিয়ে বাইরে যায়। কিন্তু যাওয়ার পর সেখানে তাদের কোনো খবর থাকে না। অনেক সময় তাদের কোনো কাজের ঠিকানাও থাকে না।’

‘অনেক সময় তাদের খবর নেওয়ার কথা বলে আত্মীয়-স্বজনকে চাপ দিয়ে তাদের কাছ থেকেও টাকা নেয়। এই ধরনের অনিয়ম সারা বাংলাদেশে আছে। আমরা এ ব্যাপারে অনেক চেষ্টা করছি জনগণকে বোঝাতে।’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আবার অনেক দেশে আমাদের মেয়েরা যায়। কিন্তু তারা কোন ধরনের কাজ করতে পারবে, সেসব তথ্য নেওয়া হয় না; কী ধরনের কাজ করতে পারবে বা করবে এর জন্য ট্রেনিংও দেওয়া হয় না। ফলে যে নারীরা যাচ্ছে, তারা কোনো কাজ করতে পারেনা এবং সেখানে অত্যাচারেরও শিকার হয়।’

‘এগুলো বন্ধ করতে তাদের স্মার্টকার্ড করে দেওয়া, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, কে কোথায় কাজ নিয়ে যাচ্ছে সেগুলোর খবর রাখার কাজ করছি। সারা বাংলাদেশে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। এই সেন্টারের মাধ্যমে তাদের রেজিস্ট্রেশন করা, এই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে তাদেরকে পাঠানো, সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’

বিদেশে নারী কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, নানা সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্বেও দালালের কারণে তারা বিপদে পড়ে যায়। মানুষ যাতে ধোঁকাবাজিতে না পড়ে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা, তাদের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদেরই।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here