সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ৮ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা পড়েছে। এদের মধ্যে তিন হেভিওয়েট আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির আবু সুফিয়ান, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আছেন। তবে ঘোষণা দিয়েও মনোনয়ন পত্র জমা দেননি বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগী এম মোরশেদ খান।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেইনে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুসহ ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এর আগে, বুধবার বিএনপির আবু সুফিয়ানসহ ২ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘মনোনয়ন পত্র জমাদানের শেষদিনে আমরা ৬ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র পেয়েছি। এর আগে ২ জন জমা দিয়েছিলেন। মোট ৮ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই হবে। প্রত্যাহারের সময় শেষে ২২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।’

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া আট প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির আবু সুফিয়ান, জাতীয় পার্টির জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) আবুল কালাম আজাদ, ন্যাপের বাপন দাশ গুপ্ত, গণফোরামের উত্তম কুমার চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্টের ফরিদুল আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এমদাদুল হক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ প্রায় শ’খানেক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নগর কমিটির অর্থ সম্পাদক সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন ছিলেন।

অন্যদিকে, বিকেলে জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলুকে নিয়ে নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাইরে কারা মিছিল করেছে, স্লোগান দিয়েছে সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীরা বিধি মেনেছেন কি না সেটাই আমরা দেখেছি।’

মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর মোছলেম উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭৩ সালের পর আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী এ এলাকায় সংসদ সদস্য হতে পারেনি। তাই নেতাকর্মীদের মধ্যে আবেগ-উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করছি।’ নির্বাচিত হলে প্রথম দায়িত্ব কালুরঘাট সেতু নির্মাণের বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি করা বলেও জানিয়েছেন মোছলেম উদ্দিন।

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমার দরজা সবার জন্য খোলা। আওয়ামী লীগের লোক, এলাকার সব লোক আমাকে কাছে পাবেন। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মহাজোটের প্রার্থীর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের চেয়ারম্যান আলাপ আলোচনা করছেন। আলাপ-আলোচনার পরে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা আমি মেনে নেবো।’

উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম-৮ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যু হয়। শূন্য আসনে আগামী ১৩ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here