ড. নিজাম উদ্দিন জামী
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস, শেরে মিল্লাত আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী (৭৮) আজ ৬জুলাই ২০২০ বিকাল ৫ টায় বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহী রা’জিউন)। তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলে এবং অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে যান। হুজুরের ইন্তেকালে সুন্নি জনতা একজন সর্বোচ্চ অভিভাবককে হারিয়েছেন। একই সাথে সুন্নি অঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমরা হুজুরের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
আগামীকাল মঙ্গলবার বাদে জোহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে হুজুরের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর মাদ্রাসার পাশে তাঁকে দাফনের কথা রয়েছে। তিনি এশিয়ার প্রখ্যাত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস ছিলেন। তিনি জামেয়া, আঞ্জুমান তথা বাংলাদেশে কাদেরিয়া তরিকার প্রবক্তা, আওলাদে রাসুল (দ) শাহসুফি মাওলানা সৈয়দ আহমদ সিরিকোটি (র), বাংলাদেশে সুন্নিয়ত প্রতিষ্ঠার অগ্রনায়ক আল্লামা আজিজুল হক গাজী শেরে বাংলা (র), পীরে কামেল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (র), আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (ম), ইমামে আহলে সুন্নাত কাযী নুরুল ইসলাম হাশেমি (র) প্রমুখ অলিয়ে কামেল ও আওলাদে রাসুলের সান্নিধ্য লাভ করেন।
তাঁর ছাত্ররা এখন দেশ-বিদেশে তরিকার খেদমত করে যাচ্ছেন। একজন সফল মানুষ ছিলেন তিনি। এর বড় প্রমাণ তিনি একটি অসাধারণ ঈমানি প্রজন্ম রেখে যেতে পেরেছেন। তিনি কেবল আলমে দ্বীনই ছিলেন না, একজন সত্যিকারের অলি ছিলেন।
তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। তিনি বাংলাদেশে কাদেরিয়া তরিকার অন্যতম প্রধান সেবকদের একজন। স্পষ্টবাদী এ নবী (দ.) প্রেমিক অগণিত শিক্ষার্থী ও ভক্তকুল রেখে যান। তাঁকে উস্তাজুল উলামা বা শিক্ষকদের শিক্ষক বলা হয়। তিনি ভ্রান্ত মতবাদের মূলোৎপাটনে সারাজীবন কাজ করে গেছেন। তিনি লিখতে যেমন পারতেন, তেমনি বক্তা হিসেবেও ছিলেন অসাধারণ। তিনি ফেরকায়ে বাতিলের আতঙ্ক ছিলেন। মাইজভান্ডারে ছিল তাঁর নিয়মিত যাতায়াত। ইমাম আহমদ রেযা খান আলা হযরতের কিতাব ও নাতে মোস্তফা (দ) পড়ে এবং পড়িয়ে মানুষকে আকিদা শিক্ষা দিয়েছেন।
গত ২ জুন তাঁর শিক্ষক ইমামে আহলে সুন্নাত মাওলানা কাযী নুরুল ইসলাম হাশেমী (র.) বিদায় নিয়েছেন। চৌত্রিশ দিন পর তাঁর প্রিয় ছাত্র মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী (র) বিদায় নেন। ছাত্র অবস্থায় হুজুরের সংস্পর্শ পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তিনি আমাদের সরাসরি শিক্ষক না হলেও ক্লাসের উদ্বোধন তাঁর হাতে পেয়েছি আমরা।