অগ্রদূত দাশ গুপ্ত
গণঅধিকার চর্চা কেন্দ্র চট্টগ্রামের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট শাখা, গণঅধিকার ফোরাম- চট্টগ্রাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড-চট্টগ্রাম,মানবাধিকার ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর, বঙ্গবন্ধু পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর, ব্রিগেড-৭১’র অংশ গ্রহণে চট্টগ্রামে কোভিড- ননকোভিড চিকিৎসার সুবিধা সৃষ্টি ও বাড়ানোর দাবিতে আজ ২৮ জুন ২০২০ ইং বেলা ১১ টা থেকে ১টা পর্যৗল্প চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচী পালনকালে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম শহর ও জেলায় কোভিড-ননকোভিড রোগীদের আশানুরূপ সেবা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দকৃত ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে ও অন্যান্য খাত থেকে দ্রুত ২ হাজার কোটি টাকা চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। সভায় চট্টগ্রামের সব সরকারি ও আধা সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের দাবি জানিয়ে কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা ২ হাজারে উন্নীত করা এবং প্রতি ৫ শয্যার বিপরীতে ভেন্টিলেটরসহ একটি করে আই.সি.ইউ. বেড প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানানো হয়। হাসপাতালগুলোর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামে ১০ হাজার শয্যার আইসোলেশন সেন্টার তৈরীর দাবি জানিয়ে সেন্টারগুলোতে অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও লোকবল এবং ১ টি বা ২টি করে এম্বুলেন্স বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। কোভিড রোগীরা সবাই প্রথমে আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি ও নিয়ম করে সেখানে কোভিড টেস্ট করার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে প্রতিটি আইসোলেশন সেন্টারে ২টি থেকে ৪টি করে জনবল সহ পি.সি.আর. মেশিন সরবরাহের দাবি জানানো হয়। শুধু মাত্র হাই-ফ্লো অক্সিজেন সহ উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন দেখা দিলে তাদের হাসপাতালে নেয়ার নিয়ম করার দাবি জানানো হয়। এইসব ব্যবস্থা নিলে চট্টগ্রামের কোভিড রোগীরা যথাযথ সেবা পাবে বলে দাবি করা হয়।
বক্তারা আরো বলেন, ননকোভিড রোগীদের জন্য সকল হাসপাতালের সেবা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয় প্রত্যেক হাসপাতালে ২থেকে ৫টি করে পি.সি.আর মেশিন দিতে হবে, যাতে হাসপাতালে আসা প্রত্যেক রোগীর কোভিড টেস্ট করে কোভিড রোগীদের আইসোলেশন সেন্টারে পাঠাতে হবে, নন কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে দিনে দিনে। এই টেস্ট হবে মুলত সাধারণ রোগীদের জন্য কোভিড রোগীদের জন্য নয়।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর একই ভাবে আইসোলেশন সেন্টার থাকতে হবে, কোভিড শয্যা ও ভেন্টিলেটরসহ আই.সি.ইউ. শয্যা রাখতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে পি.সি.আর. মেশিন থাকতে হবে যাতে ননকোভিড রোগীদের দ্রুত ভর্তি করা যায়। এর জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে।
চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের উপর নয়, চিকিৎসকদের হাতে ছেড়ে দিয়ে তাদের হাতে মান পরীক্ষা করিয়ে সুরক্ষা সামগ্রীর বন্দোবস্ত করতে হবে। কর্মসূচীতে চট্টগ্রাম সি.এম.এইচ-এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার দাবি করা হয়।
এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চট্টগ্রামের সকল জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন শ্রম কর্ম পেশার প্রতিনিধি, সাধারণ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি করা ও এই কমিটির হাতে বরাদ্দকৃত অর্থ দানের দাবি জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এই কমিটির আহ্বায়ক নির্ধারণ করে দেয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং এই কমিটির হাতে যাবতীয় কেনাকাটা, লোকবল নিয়োগ দানের ক্ষমতা প্রদানের দাবি জানানো হয়। এই কমিটি প্রয়োজনে একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করবেন।
মুক্তিযোদ্ধা আজম সাদেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনশন কর্মসূচির সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার চর্চা কমিটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান। গণঅধিকার চর্চা কেন্দ্র চট্টগ্রামের মহাসচিব মশিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগারের কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা সুস্ময় চৌধুরী, সোলায়মান খান, এম এ হাশেম রাজু, অধ্যাপক উত্তম কুমার আচার্য, মাহবুব রানা, সন্তোষ কুমার নন্দী, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সরওয়ার আলম মনি, সাহেদ মুরাদ শাকু, কাজী রাজীশ ইমরান, আরাফাতুল মান্নান ঝিনুক, ইসতিয়াক আহমেদ রুমি, জয়নুদ্দিন আহমদ জয়, বেলাল হোসেনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। প্রতীকী অনশনে আগামী ৭ দিনের মধ্যে এইসব দাবিসমুহের ব্যাপারে সাড়া না পেলে আগামী সপ্তাহ থেকে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।