আলোকিত ডেক্স : দশমাসেও কালুরঘাট সেতু কাম সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের অধিকতর সমীক্ষা শেষ করতে পারেনি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। গত বছর ৭ আগস্ট প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উঠলেও তা অনুমোদন না দিয়ে অধিকতর সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ফারুক আহমেদ গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জানান, একনেকে উঠার পর কালুরঘাট সেতু কাম সড়ক প্রকল্পটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-কালুঘাট সেতু এবং সড়ক দুটি পৃথক প্রকল্প হবে। সেতুর বিষয়টি সামনে রেখে আরও সমীক্ষার কাজ চলছে।
এদিকে কর্ণফুলী নদীর উপর কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে বলে গত ২৬ মে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতকালে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদলকে এ আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রেল সূত্র জানায়, কালুরঘাট সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ১৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৮১ কোটি ১৭ লাখ এবং কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) ঋণ থেকে ৭৮৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা ছিল।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জোড়াবিহীন রেল পরিবহনসেবা নিশ্চিত করা যাবে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার করিডোরের অপারেশনাল বাধা দূর হবে। এছাড়া, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য বড় আকারের করিডোরও তৈরি করা যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার এসএমইসি, তাইওয়ানের উয়িকন কোম্পানি এবং বাংলাদেশের এসিই কনসালট্যান্ট ও ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম যৌথভাবে কালুরঘাট সেতু কাম সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করে।
রেল পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা জানান, কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কালুরঘাটে একটি পুরনো ও দুর্বল রেলসেতু এখন চালু আছে। মিটারগেজ লাইনে সেতুটি ১৯৩১ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৬২ সালে সড়ক সেতু যুক্ত করে এটিকে রেল কাম সড়ক সেতুতে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এর কার্যক্ষমতাও কমেছে। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনগুলো ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারে এবং ২০ মিনিট পরপর যানবাহন সেটিকে অতিক্রম করে। ট্রেন চলার সময় সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে সেতুর দু’পাশেই ব্যাপক যানজট লেগে যায়। এ অবস্থায় বিদ্যমান সেতুটির পরিবর্তে নতুন রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণ অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
সূত্র : দৈনিক সুপ্রভাত