নাসির উদ্দীন হায়দার:
মেহের আফরোজ শাওন আর চঞ্চল চৌধুরীর গাওয়া ‘রাধে’ গানটি দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ আলোচিত ‘আইপিডিসি আমাদের গান’। চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান, খ্যাতিমান শিল্পী পার্থ বড়ুয়া রয়েছেন নতুন এই সংগীতায়োজনের কাণ্ডারি হিসাবে। লোকসংগীতের পৃষ্ঠপোষকতায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সংযুক্তি-বাংলা গানে দিকবদলের ইঙ্গিত দেয়।
প্রসঙ্গত, আইপিডিসি আমাদের গান-এ জসিম উদ্দিন ও আব্বাস উদ্দিনের মতো লোকসংগীতের কিংবদন্তীদের গান নতুন সংগীতায়োজেন রেকর্ড ও প্রকাশ করা হচ্ছে।
May be an image of 1 person and text that says 'কবিয়াল রমেশ শীল'‘আইপিডিসি আমাদের গান’-এর দ্বিতীয় সিজনে চট্টগ্রামের দুটি গান থাকছে। কবিয়াল সম্রাট রমেশ শীল রচিত ‘স্কুল খুলেছে রে মওলা’ এবং কিংবদন্তী আবদুল গফুর হালী রচিত ‘নাইয়র নিবা নিবা গরি’ (কালজয়ী শ্যাম-শেফালীর গাওয়া) গান দু’টি গাইছে জলের গান এবং সন্দীপন ও অরিন।
May be an image of 2 people, people sitting and indoorখুব সুখকর বিষয় যে, ‘আইপিডিসি আমাদের গান’ কর্তৃপক্ষ দুটি গান নতুন করে রেকর্ড ও প্রকাশের জন্য যথাযথ অনুমতি নিয়েছে এবং শিল্পীর উত্তরাধিকারদের সম্মানি দিয়েছে। ‘নাইয়র নিবা নিবা গরি’ গানটির জন্য আবদুল গফুর হালী রিসার্চ সেন্টারের মাননীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন স্যারের বরাবরে এবং ‘স্কুল খুলেছে রে মওলা’ গানটির জন্য রমেশ শীলের ৫ উত্তরাধিকারের কাছে আবেদনপূর্বক অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
May be an image of 6 people, including Mohsin Kazi, people standing and people sittingআমার জন্য অতিশয় আনন্দের বিষয় যে, এই দুটি উদ্যোগে আমি সম্পৃক্ত থাকতে পেরেছি। সংগীত ব্যক্তিত্ব পার্থ বড়ুয়া ও আবিদুর রেজা জুয়েল ভাইয়ের অনুরোধে এবং আবদুল গফুর হালী রিসার্চ সেন্টারের মাননীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন স্যারের নির্দেশনায় দু’টি গানের যথাযথ অনুমতি প্রদান কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। রমেশ শীলের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় সাংবাদিক আলোকিত বোয়ালখালী পত্রিকার সম্পাদক ও রমেশ বিনয় শেফালি চর্চা কেন্দ্রের সদস্য সচিব মো.তাজুল ইসলাম রাজু।
এটা অতি বড় আনন্দের বিষয় এই কারণে যে, কবিয়াল রমেশ শীলের মৃত্যুর ৫৪ বছর পর প্রথম কেউ তার গানের জন্য উত্তরাধিকারের কাছ থেকে অনুমতি নিল এবং সম্মানি দিল।
May be an image of 4 people, people standing, flower and indoorপাশাপাশি, বছর পনের আগেও আবদুল গফুর হালীর ‘পাঞ্জাবিওয়ালা, মনের বাগানে’ কিংবা এম এন আখতারের ‘কাইলজার ভিতর গাঁথি রাইখ্যম তোঁয়ারে’ গানগুলো দেশখ্যাত তারকা শিল্পীরা গেয়েছেন অনুমতি ও সম্মানি প্রদান ছাড়াই। ২০০৭ সালের দিকে প্রথম আলোতে আমার লেখালেখির কারণে অবশ্য গফুর হালী চাচার কাছে ছুটে এসেছিলেন শিল্পী হাবিব ও শিরীন। তারা পরে গফুর হালী চাচাকে যোগ্য সম্মান ও সম্মানি দিয়েছিলেন।
পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান ও আবদুল গফুর হালী রিসার্চ সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন এবং পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক আনোয়ারুল হক চৌধুরীর উদ্যোগে আবদুল গফুর হালীর ৩০০ গান ও ছয়টি আঞ্চলিক নাটক কপিরাইট সনদ পেয়েছে, এই প্রথম চট্টগ্রামে কোন কিংবদন্তী সংগীতজ্ঞের মেধাসম্পদ সুরক্ষা নিশ্চিত হলো। এই কারণে আজ জাতীয় তারকা শিল্পীরা চট্টগ্রামের চিরসবুজ গানগুলো গাওয়ার সময় অনুমতি নেয়ার কথা ভাবছেন, অনুমতি নিচ্ছেন, পরিবারকে সম্মানি দিচ্ছেন-এটা চাটগাঁইয়া গানের ইতিহাসে বড় অর্জন।
অনুমতি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় উচ্ছ্বসিত পার্থ বড়ুয়া দাদা যখন ফোন করে বলেন-”নাসির আপনাকে একটা ধন্যবাদ জানাই”-তখন মনটা ভরে উঠে অন্যরকম আনন্দে।
গানের লিংক :
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here