বিভাগীয় সম্পাদক:
১৩ রমজান। হযরত ঈশা ইবনে মরিয়ম আলায়হিস সালামের নিকট ইঞ্জিল নাজিল হয় ১৩ রমজান। গ্রীক ভাষায় ইঞ্জিনকে বলা হয় ইভাঞ্জেল। অর্থ সুসমাচার। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন ঃ আমি তাকে (ইশাকে) দিয়েছিলাম ইঞ্জিল, তাতে ছিল পথের দিশা ও আলো। (সূরা মায়িদা ঃ আয়াত ৪৬) এবং অনুগামী করেছিলাম ইশা ইবনে মরিয়মকে আর তাকে দিয়েছিলাম ইঞ্জিল (সূরা হাদিদ ঃ আয়াত ২৭)।
হযরত ইশা আলায়হিস সালামের জন্ম হয়েছিল বিনা পিতায় হযরত মরিয়মের গর্ভে এবং মানব জাতির আদি পিতা হযরত আদম আলায়হিস সালামের জন্ম হয়েছিল বিনা পিতা-মাতায় জান্নাতে। কোরান মজিদে ইরশাদ হয়েছে ঃ আল্লাহ্র নিকট ইশার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্ত সদৃশ (সূরা আল-ইমরান ঃ আয়াত ৫৯) হযরত ইশা আলায়হিস সালামের কুমারী মাতা যখন আল্লাহ্র রহমতে গর্ভবতী হলেন তখননানাজনে নানা কথা রটাতে থাকে। তখন তিনি আল্লাহ্র নিকট মোনাজাত করেন। কোরান মজিদে সে সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে ঃ সে (মরিয়ম) বলল, হে আমার রব, আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি, আমার সন্তান হবে কিভাবে? তিনি বললেন ঃ এভাবেই আল্লাহ্ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন (সূরা আল-ইমরান ঃ আয়াত ৪৭)। আল্লা জাল্লা শানুহু হযরত মরিয়মকে সিয়াম পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মরিয়মের প্রতি যে সিয়াম পালনের নির্দেশ ছিল তা হচ্ছে মৌনতা অবলম্বন। হযরত ইশা আলায়হিস সালামের ৫৭০ বছর পর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) পৃথিবীতে তসরিফ আনেন। হযরত ইশা (আঃ) প্রিয় নবী (সাঃ) এর আগমনের সুসংবাদ দিয়ে গিয়েছিলেন। কোরান মজিদে ইরশাদ হয়েছে ঃ স্মরণ কর, ইশা ইবনে মরিয়ম বলেছিল, হে বনী ইরসাইল, তোমাদের নিকট যে তওরাত রয়েছে আমি তার সমর্থক এবং আমার পর আহমদ নামে যে রসূল আসবেন আমি তাঁর সুসংবাদদাতা। (সূরা সাফ্ফ ঃ আয়াত ৬)। ইঞ্জিনের ভাষা ছিল হিব্র“। বহু নকল, অনুলিখন, সংযোজন বিয়োজন, পরিবর্তন, প্রক্ষেপণ এবং নানান হাতে ভাষান্তরের ফলে ইঞ্জিল আবিকৃত না থাকতে পারলেও বাইবেল নামে যে গ্রন্থ আছে তাতে আহমদ শব্দ না থাকলেও এর অর্থবোধক শব্দ রয়েছে, যেমন- ইংরেজী বাইবেলে রয়েছে, ঈড়সভড়ৎঃবৎ, ঃযব ংঢ়রৎরঃ ড়ভ ঃৎঁঃয এবং গ্রীক বাইবেলে রয়েছে চধৎধশষবঃড়ং বা চধৎধপষবঃব. বাইবেলে আছে যে, যিশু শিষ্যদের বলেছিলেন, এখনও তোমাদের কাছে আমার অনেক কথা বলার রয়েছে। যা হোক, যখন তিনি আসবেন,তিনি তোমাদের সকল সত্যের সন্ধান দেবেন, কারণ তিনি নিজ হতে কোন কথা বলবেন না। যা কিছু তিনি শুনবেন তাই-ই বলবেন এবং ভবিষ্যতে কি হবে তাও তোমাদের দেখাবেন। প্রিয় নবী (সাঃ) সম্পর্কে কোরআন মজিদে ইরশাদ রয়েছে ঃ এবং তিনি মনগড়া কোন কথা বলেন না। তিনি যা বলেন তা তো ওহি যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ হয় (সূরা নজম ঃ আয়াত ৩-৪)। হযরত ইশা (আঃ) পৃথিবীতে ছিলেন ছাত্র ৩৫ বছর। বনী ইসরাইল তথা ইহুদীরা তাঁকেত্র“শবিদ্ধ করে হত্যা করার উদ্যোগ নিলে আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু তাঁকে আসমানে উত্তোলন করেন। হযরত ইশার (আঃ) মতো দেখতে তায়তালানুস নামের একটি লোককে ত্র“শবিদ্ধ করে তারা হত্যা করে এবং প্রচার করে যিশুকে হত্যা করা হয়েছে। কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে এবং তারা (ইহুদীরা) অভিশপ্ত (সূরা নিসা ঃ আয়াত ১৫৬), তারা বলে আল্লাহ্র রসুল ইশা ইবনে মরিয়ামকে তারা হত্যা করেছে। আসলে তারা তাকে হত্যা করতে পারেনি, ত্র“শবিদ্ধ ও করেনি (সূরা নিসা ঃ অঅয়াত ১৫৭)। আল্লাহ তাঁকে তার নিকট তুলে নিয়েছেন (সূরা নিসা ঃ আয়াত ১৫৮)। হযরত ইশা (আঃ) সম্পর্কে কিয়ামতের আলামতে বর্ণিত আছে যে, তিনি কিয়ামতের আগে পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং উম্মতে মুহম্মদীর অন্তর্ভূক্ত হবেন।
এবি/টিআর
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here