একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ অর্থাৎ প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশের অন্ধকার গ্রামীণ জনপদের অন্ধকার তাড়াতে বসছে ‘আলোকিত পল্লী সড়কবাতি’।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে গ্রামের মানুষেরা রাত-দিন সমানভাবে নিরাপদে চলাচল করতে পারেন। এ প্রকল্পের ফলে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ মার্কেটসমূহে বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিরও প্রসার ঘটবে।

জানা যায়, প্রাথমিকভাবে দেশের ১৭ টি উপজেলার ১৩৩ টি ইউনিয়নে ৬ হাজার ১৫০ টি সৌরবিদ্যুৎ চালিত সড়কবাতি স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশের গ্রামীণ অন্ধকার দূর করতে সড়কবাতি স্থাপন করা হবে। উন্নতমানের সোলার সিস্টেমে মোট ব্যয় হবে ৪৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। অন্ধকার জনপদ আলোকিত করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন ।

পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের একটি সড়কও অন্ধকার থাকবে না। পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১৭টি উপজেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা বাংলাদেশে এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।

‘গ্রামীণ অন্ধকার সড়ক বলতে বাংলাদেশে থাকবে না। যাতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী রাত দিন ২৪ ঘণ্টাই সড়কে নিরাপদে চলাচল করতে পারে সেজন্যই এ ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি,’ যোগ করেন তিনি।

পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, যে ১৭টি উপজেলায় এ পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে সেগুলো হচ্ছে- রংপুরের পীরগঞ্জ, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, নরসিংদীর শিবপুর ও রায়পুর, যশোরের মনিরামপুর, মাগুরা সদর ও শ্রীপুর, সাতক্ষীরার তালা, জামালপুরের মেলান্দহ, নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ, কুমিল্লার লালমাই, মনোহরগঞ্জ, নাটোরের সিংড়া, বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী।

এছাড়া সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় ২০২০ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে উৎপাদন করার কথা বলা হয়েছে। সরকারের এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ‘আলোকিত পল্লী সড়কবাতি’ শীর্ষক এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২২ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রাতে যাতায়াতে দুর্ঘটনা হ্রাস, নিরাপত্তার জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ-বান্ধব সৌরবাতি স্থাপনের মাধ্যমে নাগরিক জীবনের সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। সৌরবাতি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ মার্কেটগুলোর রাতে বাণিজ্য প্রসার করে জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা হবে।

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণ এবং সরকার ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ কার্যক্রম সহায়তা করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপজেলা সদর ও পৌর এলাকা বাদ দিয়ে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি প্রত্যন্ত গ্রামে বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রাম ও শহরের পার্থক্য থাকবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here