চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতিতে তিনি শীর্ষ নীতি-নির্ধারকদের একজন। কেন্দ্রীয় পর্যায়েও তাঁর রয়েছে যথেষ্ট শক্ত অবস্থান।
এলাকায় পরিচিতি, নির্বাচনী প্রচারণা কিংবা সাংগঠনিক শক্তি, কোনো ক্ষেত্রেই অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে ছিলেন না। তবে সংসদ নির্বাচনের মঞ্চে তাঁকে গত ১৩ মাসে দ্বিতীয়বারের মতো হার সঙ্গী করে ঘরে ফিরতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের নির্বাচনী লড়াইয়ে এমন শুরু তাঁর কর্মী-সমর্থকরা চিন্তাও করতে পারেননি। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরে উপ-নির্বাচনে বড় হার সঙ্গী হয়েছে সুফিয়ানের। ব্যালট কিংবা ইভিএম- ভোটের মাধ্যম যাই হোক, হারের ব্যবধান বেশ বড় ছিল দু’বারই।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতার পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিরোধী পক্ষের হামলা, কারচুপি, এজেন্ট বের করে দেওয়াসহ অনেক অভিযোগ তোলা হলেও নির্বাচন কমিশনে তা গুরুত্ব পায়নি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের একাংশের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। আবু সুফিয়ান সে দফায় পেয়েছিলেন ৫৯ হাজার ১৩৫ ভোট।
পরে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে মইন উদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে ফের শূন্য হয় চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসন। উপ-নির্বাচনের তারিখ পড়ে। সিদ্ধান্ত হয় ব্যালট নয়, এবার ভোট হবে ইভিএমে। তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির সমর্থনে ফের প্রার্থী হন সুফিয়ান।
তবে বিপক্ষের প্রার্থীর সঙ্গে ভোটের পদ্ধতি বদল হলেও জয় জোটেনি সুফিয়ানের। সোমবারের (১৩ জানুয়ারি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমদ ৮৭ হাজার ২৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সুফিয়ান এ দফার নির্বাচনে পান ১৭ হাজার ৯৩৫ ভোট।
দলের দুঃসময়ে সবসময় মাঠে থাকা সিনিয়র এ নেতার এমন পরিণতি মানতে পারছেন না বিএনপি নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, পুনর্নির্বাচন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ কিংবা সংবাদ সম্মেলন, প্রতিবাদ হয়েছে অনেকভাবে। তবে যথারীতি কোনো ফল হয়নি।
এসব বিষয়ে কথা বলতে বিএনএ’র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল আবু সুফিয়ানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমার এজেন্ট ও দলীয় কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের প্রহসনের নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।’