দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু,
করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন পর খোলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখরিত চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলো। সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিদ্যালয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। চলছে পাঠদান। শিক্ষার্থীরা সচেতন তবে দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার পূর্ণ চন্দ্র সেন (পি সি সেন) সারোয়াতলি উচ্চ বিদ্যালয়, কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা সদরের গোমদন্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও গোমদন্ডী সরকারি আদর্শ প্রথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একটু কম হলেও মাধ্যমিকের শ্রেণি কক্ষে বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। বিদ্যালয় প্রবেশের সময় হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক নিশ্চিত করছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ার সময় দূরত্ব বজায় রেখে চলা কঠিন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে রয়েছে হাত ধোয়ার বেসিন। শ্রেণি কক্ষের প্রতি বেঞ্চে বসেছে ২জন করে শিক্ষার্থী। শিক্ষকরা বারবার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করছেন।
কথা হয় কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এস এস সি পরীক্ষার্থী নাফিজা ও দশম শ্রেণীর ব্যবসা শাখার শিক্ষার্থী অর্পিতা ধরের সাথে। তারা জানায়, দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় খুলছে তাই ভালই লাগছে। তাদের সবার কাছে রয়েছে জীবানু নাশক স্প্রে।
পি সি সেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান জানান, দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহ নিয়ে বিদ্যালয়ে আসছে। উপস্থিতির হার বেশি। শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের পাঠে অংশ নিচ্ছে। বিদ্যালয় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা সামগ্রী বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হয়েছে বিধায় ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা নগন্য বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অমিত কুমার মজুমদার (শংকর)।
তিনি বলেন, মহামারী করোনার তীব্র প্রকোপ এখন তলানীতে পৌঁছেছে। আমরা যদি প্রত্যেকে আরো সচেতন থাকি এক সময়ে তা শুণ্যের কোটায় পৌঁছে যাবে। দীর্ঘ সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পড়ালেখায় কিছুটা চাপ রয়েছে।
উপজেলার কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পাঠদান চলছিলো শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। শ্রেণি কক্ষের প্রতি বেঞ্চে বসেছে দুইজন করে শিক্ষার্থী। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পড়ার ক্ষেত্রে সচেতন রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর তাপমাত্রা মাপা হয় নিয়মিত।
প্রধান শিক্ষক বাবুল কান্তি দাস বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা সামগ্রী বিদ্যালয় থেকে দেওয়া হচ্ছে। বৃহৎ পরিসরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শ্রেণি কক্ষে পাঠদান শুরু হলেও এসাইন্সম্যান্ট চালু রাখা হয়েছে। তাদের এসাইনমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখেছি, তাদের তৈরিকৃত এই এসাইন্সম্যান্টগুলো যথেষ্ট মেধাচর্চায় ভূমিকা রাখছে।
উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণী, ২০২১ ও ২০২২ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের পাঠদানের উপস্থিতির প্রতি গুরুত্বারোপ করছেন। ২০২১ সালের পরীক্ষার্থীদের কধুরখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চারজন ও পি সসি সেন উচ্চ বিদ্যালয়ে একজন বিয়ে হয়ে যাওয়ায় অনুপস্থিত বলে জানান স্কুল প্রধানরা।
গোমদন্ডী আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩টি কক্ষে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পাঠ নিতে দেখা যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা গেছে তাদের।
প্রধান শিক্ষক নজির আহম্মদ বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বারবার হাত ধোয়া ও দূরত্ব বজায় রেখে সুশৃঙ্খলভাবে চলার বিষয়ে শিক্ষকরা হাতে কলমে শিখিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি এখন তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে উঠছে। দুই শিফটে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অজন্তা ইসলাম জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার এখন একটু কম রয়েছে। ধীরে ধীরে তা বেড়ে যাবে। ঝরে পড়ার তথ্য পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, বোয়ালখালীতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন। দুয়েকটি ব্যতিক্রম ঘটনা থাকে পারে।
যদি তুমি কিশোর গ্যাং এর হয়ে থাকো তাহলে বাস্তবতার চ্যালেঞ্জে আসতে পারো