আলোকিত বোয়ালখালী ডেস্ক

চট্টগ্রামের মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের অন্যতম আওলাদ হযরত শাহসুফী ডাঃ সৈয়দ দিদারুল হক মাইজভাণ্ডারী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) (২৩ জুলাই ২০২৫ বুধবার) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি ক্লিনিকে তিনি ইন্তেকাল করেন । দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র, ১ কন্যাসহ অসংখ্য গূণগ্রাহী ও লাখো আশেক ভক্ত রেখে যান। আজ বাদ এশা মাইজভাণ্ডার শরীফ শাহী ময়দানে হুজুরের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

ডা: দিদারুল হক মাইজভাণ্ডারী (রহ.) মাইজভাণ্ডারী ত্বরিকার প্রবর্তক হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী(ক.) এর নাতী হযরত সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী(ক.) এর পুত্র এবং মাতা হলেন হযরত সৈয়দা সাজেদা খাতুন। যিনি হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভাণ্ডারী(ক.) এর কন্যা ছিলেন।

পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে ডা: দিদারুল হক মাইজভাণ্ডারী ৪র্থ। উনার ভাইগণ হলেন, অন্যতম আধ্যাত্বিক সাধক বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.), হযরত সৈয়দ মনিরুল হক মাইজভাণ্ডারী (রহ.) উনারা দুজন ওফাত লাভ করেছেন। অন্য দুই ভাই হলেন, হযরত সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.) এবং হযরত সৈয়দ সহিদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)।

উল্লেখ্য, ডা. সৈয়দ দিদারুল হক মাইজভাণ্ডারী হলেন,মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। উনি গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন এবং আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারীর সভাপতি, শানে গাউসুল আজম মাইজভান্ডারী ফোরামের চেয়ারম্যান ছিলেন।

তিনি মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন। উনি তরীক্বতের আলোচনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন এবং মাইজভাণ্ডারী তরিকার শিক্ষা ও আদর্শ প্রচার করেছেন। তাঁর লক্ষ লক্ষ আশেক ভক্ত রয়েছে।

তাঁর চেহারায় ছিল আধ্যাত্মিক দীপ্তি, কথায় ছিল অপার মমতা, আর কেরামতিতে ছিল অমোঘ আকর্ষণ। তিনি ছিলেন একাধারে পীর, চিকিৎসক, মরমী চিন্তাবিদ এবং অসাধারণ জ্ঞানগম্ভীরতার অধিকারী। তাঁর প্রতিটি বাণী ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো, তাঁর আচার-আচরণ ছিল নির্লোভ ও নিঃস্বার্থ মানবসেবার এক জ্বলন্ত উদাহরণ।
আজ তিনি চলে গেলেন চির বিদায়ের পথে।
আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও শোকের সাথে স্মরণ করছি এই আধ্যাত্মিক পুরুষকে সারাজীবন যিনি মানুষের আত্মশুদ্ধি, সত্য ও মানবতার আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর এই মৃত্যু শুধু মাইজভাণ্ডারি তরিকার জন্য নয়, বরং সারা দেশের আধ্যাত্মিক সমাজের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

হুজুরের মৃত্যুতে ফটিকছড়িসহ সারা দেশে তাঁর ভক্ত অনুরক্তদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হুজুরের জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য আশেকানে মাইজভাণ্ডারী বিভিন্ন কমিটির লোকজন দরবার শরীফের দিকে রওনা দিয়েছে বলে দরবার সূত্রে জানা গেছে। তাঁর ইন্তেকালে বিভিন্ন সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ গভীর শোক প্রকাশ করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here