চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের বাইরে ককটেলবাজির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট দিতে বাধার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান।

ভোটের ‘সুষ্ঠু পরিবেশ নেই’ অভিযোগ করে তিনি বলেছেন, “বহিরাগতরা ভোটকেন্দ্রের আশপাশে অবস্থান নিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দিচ্ছে। আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।”

সোমবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম নগরী ও উপজেলার ১৭০টি কেন্দ্রের এক হাজার ১৯৬টি ভোট কক্ষে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সবগুলো সকালের ভাগে শীত আর আর কুয়াশার মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায় ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম।

ভোট শুরুর পরপরই বহদ্দারহাট মোড়ে এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার সিডিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, “ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ তো নেই।”

এই কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, “সুন্দর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। বিএনপির কাজই হলো অভিযোগ করা। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো গোলাযোগ হয়নি। ভোটাররা সুন্দরভাবে ভোট দিচ্ছে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) দেবদূত মজুমদার বলেন, “আবু সুফিয়ান প্রচুর কর্মী সমর্থক নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করলে হৈ চৈ শুরু হয়। তখন তাকে পুলিশ পাহারায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

চান্দগাঁও এনএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে একজনকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের হাতাহাতিও হয়েছে।

এছাড়া রাবেয়া বসরী ইনস্টিটিউট ও আল হুমাইয়া মহিলা মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাবেয়া বসরী কেন্দ্রের বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট সালাউদ্দিন সাহেদ।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, “সামান্য অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে তাতে ভোট গ্রহণে কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন দুই একটি অভিযোগ যা এসেছে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে প্রশ্ন করলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরাও কয়েকটা শব্দ শুনেছি কেন্দ্রের বাইরে। তবে ভেতরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”

সকালে নগরীর চান্দগাঁও মজিদিয়া ইসলামীয়া আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটার উপস্থিতি একবারেই হাতেগোণা।

চার হাজার ৯০২ জন ভোটারের এই কেন্দ্রে দুই হাজার ৩৪৮ পুরুষ এবং দুই হাজার ৫৫৪ জন নারী। পুরুষ ও নারীদের জন্য ছয়টি করে মোট ১২টি বুথে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলছে সেখানে।

সকাল ৯টা ২০ মিনিটে কেন্দ্রে গিয়ে কোনো নারী ভোটারকে লাইনে দেখা যায়নি, এমনকি নারীদের বুথে কোনো ভোটও পড়েনি। পুরুষদের বুথেও ভোটারদের লাইনে ছিলেন জনা দশেক ভোটার।

নারী কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. ইউসুফ জানান, “শীত ও কুয়াশার কারণে ভোটার উপস্থিতি নেই। বেলা বাড়লে উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করছি।”

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা, মহানগরীর চান্দগাঁও ও বায়েজিদের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনে এই উপ নির্বাচনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদের নৌকা এবং বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানের ধানের শীষের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছেন সবাই।

বাকি চার প্রার্থী হলেন- বিএনএফের এস এম আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ আহমদ (চেয়ার), ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত (কুঁড়েঘর) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক (আপেল)।

বাংলাদেশ জাসদের নেতা মইন উদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হলে নির্বাচন কমিশন উপ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here