অনলাইন ডেক্স : আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই নিয়ে বর্ষাকাল। বর্ষাঋতুরশুরু।। পৃথিবীর আর কোনো দেশে ঋতু হিসেবে বর্ষার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বা নাম নেই। বর্ষা ঋতু যেন শুধু বাঙালিদের ঋতু । আষাঢ়ের পূর্বা ভাস নিয়ে অনেক আগেই ফুটতে শুরু করে কদম ফুল । কদম ফুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণ যুগে যুগে নগরবাসী কিংবা গ্রামবাসীকে মুগ্ধ করে এসেছে। তাই বর্ষা কবিদের ঋতু, নজরুল-রবীন্দ্রনাথের ঋতু। ‘বৃষ্টি ঝরুক আর নাই-বা ঝরে পড়ুক। বাদল দিনে প্রথম কদম ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক।আষাঢ় মাসের নাম করণ হয়েছে তারার নামে । অন্যান্য মাসের নাম করণে যেমনটি ঘটেছে । সে তারার নাম ‘আষাঢ়া’। অর্থ পানি তার বৈভব। কদম গাছের শাখে পাতার আড়ালে ফুটে থাকা অজস্র কদম ফুলের সুগন্ধ লোকালয় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাই তো কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত।
কদম। স্থানীয় অন্যান্য নাম : কদম্ব, নীপ। বৈজ্ঞানিক নাম : Anthocephalus indicus . ফুল ফোটার মৌসুম : গ্রীষ্ম ও বর্ষা। পরিবার : জঁনরপবধব। জš§স্থান : ভারত, চীন ও মালয় বিস্তৃতি। বাংলাদেশের গ্রাম, ঢাকায় রমনা পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যান।
কদম ছাড়া কী গ্রাম হয়! সেখানে এরা অবহেলা-অনাদরেই বাড়ে ও বাঁচে। একসময় লোকালয়ের অগভীর বন-বাদাড়ে অঢেল ছিল। এখন সংখ্যায় কমেছে। কদমের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। কদম ফুল হিসেবে অতি প্রাচীন বৈষ্ণব সাহিত্য থেকে লোকগাথা, পল্লীগীতি ও রবীন্দ্র-কাব্য পর্যন্ত বহুল উপমায় বিভূষিত তার গুণগাথা।

প্রস্ফুটন মৌসুমে ছোট ছোট ডালের আগায় একক কলি আসে গোল হয়ে। ফুল বেশ কোমল ও সুগন্ধী। একটি পূর্ণ মঞ্জরিকে সাধারণত একটি ফুল বলেই মনে হয়। কিন্তু বলের মতো গোলাকার মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস অতি চমৎকার। মঞ্জরির রঙ সাদা হলুদ মেশানো। সব মিলিয়ে সোনার বলের মতো ঝলমলে। বৃতি সাদা, দল হলুদ, পরাগচক্র সাদা এবং বাইরের দিকে মুখ। কদম গাছের বাকল জ্বরে উপকারী, পাতার রস ছোদের কৃমিতে ব্যবহার্য। ছাল ও পাতা ব্যথানাশক। মুখের ঘায়েও পাতার রস কার্যকরী।
বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান,
আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান॥
আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান॥
মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে
রেখেছি ঢেকে তারে
এই-যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান॥
রেখেছি ঢেকে তারে
এই-যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান॥
আজ এনে দিলে,
হয়তো দিবে না কাল–
হয়তো দিবে না কাল–
রিক্ত হবে যে তোমার ফুলের ডাল। এ গান আমার শ্রাবণে শ্রাবণে তব
বিস্মৃতিস্রোতের প্লাবনে
ফিরিয়া ফিরিয়া আসিবে তরণী বহি তব সম্মান॥
বিস্মৃতিস্রোতের প্লাবনে
ফিরিয়া ফিরিয়া আসিবে তরণী বহি তব সম্মান॥
আমি আবারও ফিরিয়া আসিবো
এ নিখিলে, এই প্রাচ্যের ডান্ডিতে;
হয়তো মিশিয়া যাইবো ইট-পাথরে
আলকাতরা মাখা এ ভাঙা সড়কে। এই নগরীর মাটিতে পচে গলে;
আমি হইবো কদম ফুলের গাছ।
প্রতি বছর সে গাছে ঢিল ছুঁড়িবে,
ফুল কুড়াইবে ষোড়শী কিশোরী। উন্মাদ উল্লাসে ফেঁটে পরা হাসি
এ নিখিলে, এই প্রাচ্যের ডান্ডিতে;
হয়তো মিশিয়া যাইবো ইট-পাথরে
আলকাতরা মাখা এ ভাঙা সড়কে। এই নগরীর মাটিতে পচে গলে;
আমি হইবো কদম ফুলের গাছ।
প্রতি বছর সে গাছে ঢিল ছুঁড়িবে,
ফুল কুড়াইবে ষোড়শী কিশোরী। উন্মাদ উল্লাসে ফেঁটে পরা হাসি
এই কদম ফুল, আমি ভালবাসি।
সমাধির পাশে, পুকুর যেন থাকে
হাঁটু পানিতে, ফুল তুলিতে আসে। আমি অবাক হইয়া দেখিব তাহা
শখটুকু পারিলে মিটাইয়ো, ওগো
মরিবার পরে, ফুল তুলিতে এসো
ষোড়শীর ন্যায় তুমি ভালোবেসো।
সমাধির পাশে, পুকুর যেন থাকে
হাঁটু পানিতে, ফুল তুলিতে আসে। আমি অবাক হইয়া দেখিব তাহা
শখটুকু পারিলে মিটাইয়ো, ওগো
মরিবার পরে, ফুল তুলিতে এসো
ষোড়শীর ন্যায় তুমি ভালোবেসো।