আলোকিত ডেক্স : আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক থাকবেন বলেও আদালতকে জানান তিনি।

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নামি-দামি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের (সাবস্ট্যান্ডার্ড) ৫২ পণ্য বাজার থেকে দ্রুত সরাতে না পারার ব্যাখ্যা দিতে রোববার (১৬ জুন) সকালে আদালতে হাজির হয়েছিলেন মাহফুজুল হক। পণ্যগুলো বাজার থেকে সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন।

গত ২৩ মে তাকে তলব করেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া, বাজার থেকে ৫২ পণ্য তুলে নিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রতিপালন না করায় তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও জারি করেন।

এর আগে, শনিবার (১৫ জুন) নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, রোববার মামলাটি শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত আছে। আদালত যেহেতু আদেশ দিয়েছেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হাজির হবেন। ওই ৫২ পণ্য কেন সরানো যায়নি, তারও ব্যাখ্যা আমরা দেবো।

সম্প্রতি রমজান উপলক্ষে বিএসটিআই ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৩১৩টির মধ্যে ৫২ পণ্য মানহীন বলে প্রতিবেদন দেয় বিএসটিআই।

বিএসটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৫২ নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের জন্য গত ৬ মে আইনি নোটিশ পাঠায় কনসাস কনজ্যুমার সোসাইটি। নোটিশ অনুযায়ী পণ্যগুলো প্রত্যাহার না করা হলে পণ্যগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহার চেয়ে গত ৯ মে ওই সোসাইটির পক্ষে জনস্বার্থে আদালতে রিট দায়ের করেন হাইকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।

গত ১২ মে রিটের শুনানি নিয়ে বাজার থেকে এসব পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে পণ্যগুলো বাজার থেকে তুলে নিয়ে ধ্বংসের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এই সঙ্গে ওই আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে ২৩ মে বৃস্পতিবার প্রতিবেদন দেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। প্রতিবেদনে ৫২ পণ্যের একটির প্যাকেটও জব্দ করার বিষয়টি না থাকায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত অবমাননার রুল জারি করে তাকে তলব করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। ভোক্তা অধিকারের পক্ষে ছিলেন কামরুজ্জামান কচি, প্রাণ অ্যাগ্রোর পক্ষে ছিলেন এম কে রহমান, এসিআইর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সান চিপসের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম, বাঘাবাড়ী ঘির পক্ষে মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী ও বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন সরকার এম আর হাসান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here