ভারী বর্ষণে দেড় কিলোমিটার লাইন দেবে যাওয়ায় চারদিন ধরে চট্টগ্রাম-দোহাজারী লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাইনের মেরামত কাজ শেষ হওয়ায় আজ বুধবার থেকে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পূর্বাঞ্চলের মেইন লাইনগুলো নিয়মিত মেরামত করা হলেও অভ্যন্তরীণ লাইনগুলোর (শাখা লাইন, লুপ লাইন ও ইয়ার্ড লাইন) দিকে প্রকৌশল বিভাগের তেমন নজরদারি নেই। কাগজে-কলমে শাখা লাইন, লুপ লাইন ও ইয়ার্ড লাইনগুলো মেরামতের কথা বলা হলেও বাস্তবে এই লাইনগুলোর অবস্থা করুণ। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল ও পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত ১৩ জুলাই থেকে দোহাজারী রেললাইন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভারী বর্ষণের সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে দোহাজারী স্টেশন তিন ফুট পানির নিচে তালিয়ে যায়। পানিতে দেড় কিলোমিটার রেললাইন দেবে গেলে ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার বোরহান উদ্দিন জানান, দোহাজারী লাইনের মেরামত কাজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেষ হয়েছে। বুধবার (আজ) থেকে এই লাইনের ট্রেন চলবে।
তিনি জানান, দোহাজারী লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্টেশন পানিতে ডুবে গেছে। মেরামতের জন্য টিম যেতেও বেগ পেতে হয়েছে। জানা গেছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র রেললাইন চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটটি পূর্বাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ রুটের মধ্যে একসময় জনপ্রিয় এবং লাভজনক ছিল। মাঝখানে দীর্ঘ সময় এটি জরাজীর্ণ রুটে পরিণত হয়। সারা দিনে একটি মাত্র ট্রেন চলাচল করলেও তেমন যাত্রী ছিল না। যাত্রীবাহী এই ট্রেনে করে লোকজন কাঁচামালসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করত। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে রেলের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। মেইন লাইনের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ শাখা লাইনগুলোও মেরামত করা হয়। পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম-দোহাজারী ও চট্টগ্রাম-হাটহাজারী-নাজিরহাট লাইন দুটিও সংস্কার করা হয়। বাড়ানো হয় ট্রেনের সংখ্যাও। গত বছর সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক পটিয়ায় এসে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে প্রতিদিন দুই জোড়া ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধন করেন। এখন আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই রুটটি। চারদিন ধরে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় তিন উপজেলার যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহান।