দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু:  বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়া মোড় থেকে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর বুড়া মসজিদের দূরত্ব পৌণে দুই কিলোমিটার। এ দুই কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে দূর্ভোগে পড়তে হয় যাতায়াতকারীদের।

উপজেলার আমুচিয়া, পোপাদিয়া ও শ্রীপুর-খরণদ্বীপ তিন ইউনিয়নের সন্ধিস্থল এ সড়ক। কানুনগোপাড়া থেকে শ্রীপুর বুড়া মসজিদ পর্যন্ত এই পৌণে দুই কিলোমিটার সড়কের ইট, সুরকি ও বিটুমিন উঠে গিয়ে প্রায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে নিত্যদূর্ভোগের মধ্য দিয়ে যান ও জন চলাচল রয়েছে এ সড়কে।

জুমার নামাজ আদায় করতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত হাজারো মুসল্লীর সমাগম ঘটে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর বুড়া মসজিদে। দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাঁদের। শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি।

শ্রীপুর বুড়া মসজিদে পটিয়া উপজেলা থেকে আসা শিক্ষক আবদুল্লাহ আল নোমান জানান, কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের পর থেকে মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছুতে মনে হচ্ছিল এই বুঝি গাড়ি উল্টে যাবে। ৬ মাস আগে একবার এসেছিলাম মসজিদে। তখন যে নাজুক অবস্থা ছিল সড়কের, এখন তা আরো বেড়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

অটোরিকশা চালক মঈন উদ্দিন বলেন, এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানো অনেক কস্টের। দিনে একবার আসা যাওয়া করলে সারা শরীর ব্যথা হয়ে যায়। সড়কের গর্তে পড়ে গাড়ি উল্টে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশও নস্ট হয়ে যায়। বৃষ্টির সময় তো গাড়ি চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে।

স্যার আশুতোষ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া জানায়, বর্ষা মৌসুমে কাদাপানিতে একাকার হয়ে থাকে এ সড়কটি। শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জ্যৈষ্ঠপুরা থেকে অনেক কস্ট করে কলেজে আসা যাওয়া করতে হয়।

এ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জন্য বালু পরিবহণকারী ‘ডাম্পার’ নামক পিকআপ ও দৈত্যাকৃতির চাকা বিশিষ্ট ট্রাক্টরগুলোই বেশি দায়ী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, সড়কে বড়বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এ গাড়িগুলোর জন্য। প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি বালু আনা নেওয়া করে এ সড়ক দিয়ে।

স্থানীয় ইকবাল হোসেন বলেন, প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় এ সড়ক দিয়ে রাতদিন অবৈধ ট্রাক্টর ও ড্রাম্পার চলাচল করে। অবৈধভাবে নদীর বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। এছাড়া পাহাড় উজাড় করে গাছ কেটে পরিবহণ করা হয় এ সড়ক দিয়ে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছিয়া খাতুন বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। এ সড়কের দায়দায়িত্ব সড়ক ও জনপদ বিভাগের। তবে উপজেলায় চলাচলরত ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here