রুমিয়ে বাঙ্গাল বজলুল করিম মন্দাকিনী আহমদীউল-কাদেরী কেবলা কাবার একটি কালামে পাকের ব্যাখ্যা —

১) আমার মরণ কালে ঢোল বেলা বাজাইও
দরবারী ভাই ওরে।
কলেমা কালাম ভাই,
আমার কিছুই দরকার নাই,
গাওছ ধনের গুণগীতি গাইও।

~ ব্যাখ্যাঃ সূফি আউলিয়ায়ে কেরামগণ “ঢোল-তবলা-হারমোনিয়াম” তথা বাদ্যযন্ত্রেও আল্লাহ পাক রব্বুল ইজ্জত এঁর জিকির শুনতে পান। আলহামদুলিল্লাহ্। তাছাড়া সমগ্র সৃষ্টিই তো মওলার জিকিরে রত। কিন্তু বর্তমানে ফতোয়া বেপারী কিছু ফখরী (মূল-উই) কোনো কিছুর মূল উদ্দেশ্য না দেখেই ফতোয়া হাঁকে। সূফি আউলিয়ায়ে কেরামের অনুসরণে রুমিয়ে বাঙ্গাল এই চরণগুলো লিখেছেন। যেহেতু তিঁনি আপন মুর্শিদের প্রেমে ফানাহ ছিলেন, সেহেতু মুর্শিদ প্রশংসা গীত গাইতে বলেছেন। হক্কানি মুর্শিদের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর হাবিব ﷺ এঁর নৈকট্য অর্জন সম্ভব। কলেমা কালাম দরকার নাই বলতে তিঁনি বুজাতে চেয়েছেন মুর্শিদের মাঝে কালেমার হাকীকত।

বলে রাখি, এই কালামে পাক এঁর রচয়িতা খলিফায়ে গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী, রুমিয়ে বাঙ্গাল বজলুল করিম মন্দাকিনী আহমদীউল-কাদেরী কেবলা কাবা ছিলেন ফানা-ফিস শায়খ অর্থাৎ আপন পীর ও মুর্শিদ হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী সাইয়্যিদুনা আহমদ উল্লাহ্ কেবলা কাবায়ে আলম এঁর কদমে ফানাহ্ (বিলীন ছিলেন) যাঁর প্রমাণ স্বরূপ নিজে নামের সাথে “আহমদীউল-কাদেরী” লাগিয়েছেন।

২) শমনে হরিতে প্রাণ,
মওলা ধনের গুপ্ত দান।
ইছমে আজম পড়িয়া শুনাইও।
কবরে শোয়াবে যবে, তরিকতের ভাই সবে।
হাল্কা রবে করবলা দেখাইও।

~ ব্যাখ্যাঃ আজরাইল আলাইহিস সালাম যখন প্রাণ নিতে আসবেন তখন মুর্শিদে বরহক এঁর সবক ইছমে আজম (আল্লাহর নাম মোবারক) পড়িয়ে শুনাতে বলেছেন। কবরে দেওয়ার সময় তরিকতে ভাইদের ক্ষণিকের জন্য শোক প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৩) বাবা ধনের পুত্র হলে,
ঝুটা ফকির না হইলে,
এসব কথা হেলা না করিও।
আমি হই ছোলতানের বেটা,
ধরিও ছোলতানী বাওটা,
কুত্তা মরা মোরে না গারীও।

~ ব্যাখ্যাঃ অর্থাৎ গাউছে ভাণ্ডারীর রূহানি সন্তান কখনোই ভণ্ড ফকির হতে পারেনা, এবং তাঁর (রুমিয়ে বাঙ্গাল) এই কথাগুলো অবহেলা যেন না করে। গাউছে ধনের রূহানী সন্তান বলে নিজেকে ছোলতানের ছেলে হিসেবে সম্বোধন করে, ছোলতানী কায়দায় দাফন করতে বলেছেন। কুকুরের মত নয়।

৪) শরীয়তের কাঠমোল্লাগণে,
বহু কষ্ট এ জীবনে,
দিয়াছে আর সে সব না শুনিও।
আমার অছিয়ত পালনে,
যেই বেবুঝা বাধা আনে,
মালীর ঝাঁটা তার মুখে মারিও।

~ ব্যাখ্যাঃ শরীয়ত নিয়ে অপতর্ককারী কাঠমোল্লারা বহু কষ্ট দিয়েছে প্রেমিক করিমকে, এখন তাদের বর্জনের সময় এসেছে। রুমিয়ে বাঙ্গাল এঁর অছিয়ত পালনে কোনো শয়তান বাধা আনলে তাকে ঝাড়ু দিয়ে বিতাড়িত করা নির্দেশ দিয়েছেন।

৫) আলেমরূপী জাহেল দলে,
শরিয়তের তর্ক নিলে,
আমার পক্ষে এই কথা বলিও।
আমি বাবার প্রেমের মরা,
প্রেমাগুণে জ্বলে সাড়া,
ভাল মানুষ এথা না থাকিও।

~ ব্যাখ্যাঃ আলেমের সূরতধারী শরিয়ত নিয়ে তর্ককারী (মূল-উই) দের যেন বলা হয়, মুর্শিদের প্রেমে তিঁনি ফানাহ্, প্রেমের আগুনে জ্বলে পুড়ে অস্তিত্ব বিলীন। সুতরাং ভালরূপধারী ভণ্ড ফতোয়া ব্যাপারী এবং পবিত্র শরীয়তকে তর্কের বিষয় বানানো কাঠমোল্লারা যেন রুমিয়ে বাঙ্গালের সামনে না আসে। উল্লেখ্য শরীয়ত শরীফ তর্কের নয়, প্রেমের।

৬) তবু যদি বাধা ধরে, তীক্ষ্ণ ছুরি লয়ে করে,
দু’চার জনা শহীদ হয়ে যাইও।
ভাই তোমাদের পায়ে পড়ি,
মওলাধনের দোহাই ধরি,
আমার কথা ভুলিয়া না যাইও।

~ ব্যাখ্যাঃ ভণ্ড কাঠমোল্লাদের বিরুদ্ধে রুমিয়ে বাঙ্গাল জিহাদ ঘোষণা করেছেন। যাদের কারণে প্রেমের ধর্ম ইসলামের বদনাম হচ্ছে তিলে-তিলে। এটা তিঁনি আপন মুর্শিদ কেবলার দোহাই দিয়ে বলেছেন। আলহামদুলিল্লাহ্! মুর্শিদ কেবলার প্রেমে কেমন ফানাহ্ ছিলেন। আহ্!

৭) বাপ ডাকিলাম, ভাই ডাকিলাম,
মওলাধনের দোহাই দিলাম,
করিমকে এইভাবে চালাইও।

~ ব্যাখ্যাঃ শেষ নিবেদনেও, আপন পীর ও মুর্শিদ হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী কেবলা কাবায়ে আলম এঁর দোহাই দিয়ে বলতেছেন, করিমকে যেন এইভাবে চালানো হয় কেয়ামত পর্যন্ত।

-ইমরান হোসাইন তানভির

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here