পঞ্চমী তিথিতে বেলশাখায় দেবী দুর্গার বোধন হয়েছে। দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবীর নিদ্রা ভাঙার জন্য পারিবারিক মণ্ডপে করা হয়েছে পূজা।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) শুক্লাষষ্ঠীতে পূজার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। জগতের মঙ্গল কামনায় কৈলাসবাসি দেবীর আগমন ঘটেছে ঘোড়ায় চড়ে। বিজয়া দশমীতেও দেবী দুর্গা কৈলাসে ফিরবেন ঘোড়ায় চড়ে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার জানান, এবছর নগরের ১৬টি থানায় ২৭০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা চলছে। পরিষদের উদ্যোগে পূজার আয়োজন করা হয়েছে জে এম সেন হল প্রাঙ্গণে।
এ বছর চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলায় সর্বজনীন ১ হাজার ৫১৬টি ও পারিবারিক ৩৫৯টিসহ মোট ১ হাজার ৮৭৫টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি নটু কুমার ঘোষ বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের ৭টি উপজেলা ও ৯টি থানা এলাকা, মীরসরাই, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এবং ভূজপুর ও জোরারগঞ্জ থানাসহ সর্বমোট ৮১৫টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্বোধন করেছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। নগরের জামালখান কুসুম কুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চলছে মায়ের আরাধনা।
দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল বোয়ালখালীর মেধস আশ্রমে মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। সেখানে শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী মায়ের পূজা চলছে বলে জানান আশ্রমের অধ্যক্ষ বুলবুলানন্দ ব্রহ্মচারী।
নগরের হাজারী লেইন, জেএমসেন হল, চেরাগী পাহাড়, রাজাপুকুর লেইন, চকবাজার, পাথরঘাটা, আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা, মুরাদপুর সহ বিভিন্ন স্থানে মণ্ডপে মণ্ডপে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। এই চালচিত্রে আছেন দেবাদিদেব শিবও। লক্ষ্মী সমৃদ্ধি ও সরস্বতী জ্ঞানের প্রতীক। কার্তিক হচ্ছেন দেবসেনাপতি, শত্রুনাশকারী। আর গণেশ সর্বসিদ্ধিদাতা অর্থাৎ মানুষের কামনা পূরণকারী।
দুর্গতিনাশিনী দুর্গা এসেছেন বিশ্ব শান্তির জন্য তথা সবার মঙ্গলের তরে। প্রতি শরতে মর্ত্যে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হয় ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে। ভক্তকুলের আবাহন আর পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণে দেবী দুর্গা প্রসন্ন হন। পূজার সময়কালে সন্ধ্যায় ধূপ-ধুনোয় ভক্তদের নৃত্য আরতি, আর ঢাক-ঢোল, কাঁসর-মন্দিরা বাদ্য, বর্ণাঢ্য আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে পূজামণ্ডপগুলো। খবর বাংলানিউজ