চাটগাঁ নিউজের সৌজন্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক : শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১২ টিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বাকি ৪ আসনের মধ্যে ৩টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী একটিতে বিজয়ী হয়েছেন। রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত ভোটে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

চট্টগ্রাম–১ (মিরসরাই)
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯৯৫ ভোট।

নির্বাচনে মোট ৩৯ দশমিক ০৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬২৫ জন।

চট্টগ্রাম–২ (ফটিকছড়ি)
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের তরমুজ প্রতীকের স্বতস্ত্র প্রার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ভোট পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৫৮৭। বিজয়ী খাদিজাতুল আনোয়ারের প্রাপ্ত ভোট ১ লাখ ৩৭০ ভোট।

চট্টগ্রাম–৩ (সন্দ্বীপ)
সন্দ্বীপ আসনে হ্যাট্রিক বিজয় লাভ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা।

তিনি ৫৪ হাজার ৭ শত ৫৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭০ ভোট।

সন্দ্বীপে মোট ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৯১৪ জন। ভোট পড়েছে শতকরা ৩৬ দশমিক ২১ ভাগ।

চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড, আকবরশাহ,পাহাড়তলী আংশিক)
এ আসনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ১২৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব এসএম আল মামুন।

তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনীত প্রার্থী দিদারুল কবির দিদার লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৮০ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫১ হাজার ৫৭১ এবং প্রার্থী ছিলেন ৬ জন।

চট্টগ্রাম–৫ (হাটহাজারী-বায়েজিদ আংশিক)

হাটহাজারী আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট।

তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী (কেটলি প্রতীক) পেয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫১ ভোট।

এই আসনে ১৪৬ কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৩ জন। এখানে বাতিল হয় মোট ১ হাজার ৩৯০ ভোট। কাস্টিং ভোটের হার ২৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–৬ (রাউজান)

টানা পঞ্চমবার নৌকা প্রতীকে জয়ী হলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট। এ আসনে ভোট পড়েছে ৭২ দশমিক ৭২ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক)

এ আসেন চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। তিনি ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়েছেন।

তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ ইকবাল হাছান (মোমবাতি) পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০১ ভোট।
এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯১। ভোট পড়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৬, মোট ৬৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও)

বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনে ফলাফলে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।

তিনি পেয়েছেন ৭৮ হাজার ২৬৬ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট।

এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৪৩ হাজার ১৪৭। ভোট দিয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৯১ জন। ভোটের হার ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ। ভোটের শতকরা হার ৩৬ দশমিক ০১ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–৯ (কোতোয়ালী)

নগরীর কোতোয়ালী আসনে বড় ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ নিয়ে তিনি দ্বিতীয় দফায় এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পেয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী সনজিদ রশিদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮২।

এখানে মোট ভোটার চার লাখ ১৭ হাজার ৯৪৭। এর মধ্যে এক লাখ ৩৮ হাজার ৫৫৮ জন ভোট দিয়েছেন। ভোটের হার ৩৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–১০ (ডবলমুরিং-পাঁচলাইশ)

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু প্রায় ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র এম মনজুর আলমকে।

মহিউদ্দিন বাচ্চু পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৪ ভোট। তাঁর নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থী মনজুর আলম পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৫৩৫ ভোট।

এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ২১১। ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ৭৪৯ জন। ভোটের হার ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)

নগরীর বন্দর-পতেঙ্গা আসনে ৫১ হাজার ৪৯৪ ভোটে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ লতিফ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কেটলি প্রতীকে জিয়াউল হক সুমন পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৫২৫ ভোট।

মোট ভোটার ৫ লাখ ১৬ হাজার ৯৮৩। ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ৮৫১ জন। ভোটের হার ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–১২ (পটিয়া)

পটিয়ায় ভরাডুবি হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ৮৫ হাজার ৭৩ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন তিনি।

মোতাহেরুল ইসলাম এই আসন থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানে সামশুল পেয়েছেন মাত্র ৩৫ হাজার ২৪০ ভোট।

চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী)
এ আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীর প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এনিয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য হলেন তিনি।

মোট ৪৬টি ভোটকেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী পেয়েছেন ৬০ হাজার ৭৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের মাস্টার আবুল হোসেন (মোমবাতি) পেয়েছেন এক হাজার ৬৬১ ভোট।

এ আসনে মোট ভোটার এক লাখ ২৬ হাজার ২৫৭ জন। এর মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৬৫ হাজার ৫৫২ জন ভোটার।

চট্টগ্রাম–১৪ (চন্দনাইশ)

চন্দনাইশ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নজরুল ইসলাম চৌধুরী ৭১১২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।  তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরী পেয়েছেন ৩৬৮৮৪ ভোট।

এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৮ হাজার ২৯৩ জন।

চট্টগ্রাম–১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া)

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ মোতালেব।

ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৮৫৯৫৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী পেয়েছেন ৩৯২৬৫ ভোট।

এই আসনের ১টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়নের ১৫৭টি কেন্দ্রের ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৪১১ জন ভোটারের মাঝে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ২১৮ জন ভোটার যা শতকরা হারে ২৮ শতাংশ।

চট্টগ্রাম–১৬ (বাঁশখালী)
এ আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রতীকের প্রার্থী মুজিবুর রহমান। তিনি ৫৭ হাজার ৪৯৯ হাজার পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ কবির লিটন (ট্রাক) পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট।

মোট কেন্দ্র সংখ্যা ১১৪টি। এ আসনে ৩৬ হাজার ৯৬৮ ভোট বাতিল করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here