আলোকিত ডেস্ক: রোহিঙ্গারা যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফিরে যাক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। মানবিক কারণে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। এর ফলে কক্সবাজারের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে  ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের কাঁধে। পাহাড়-জঙ্গল কেটে বসতি হচ্ছে। ওই এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই তারা ( রোহিঙ্গারা) যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফিরে যাক।’

বুধবার (১০ জুলাই) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত গ্লোবাল কমিশন অব অ্যাডাপটেশনের ঢাকা বৈঠকে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্লোবাল কমিশন অব অ্যাডাপটেশনের সহযোগিতায় আমরা চাচ্ছি, জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সঠিক অভিযোজনের কৌশল শিখতে। যে সুপারিশগুলো আসবে সেগুলো যেন স্মল আইল্যান্ড কান্ট্রিগুলো (ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশ) গ্রহণ করতে পারে। আমি শুধু আমার নিজের দেশের কথাই ভাবি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে অনেক দেশ হারিয়ে যাবে। সেখানকার মানুষগুলো কোথায় যাবে? তাদের কথাও ভাবি। সে কারণে আমি বাংলাদেশে রিজিওনাল অ্যাডাপটেশন সেন্টার গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছি। এতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের সভাপতি বান কি মুন। তাকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।’

এসময় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি জানান, প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের কাঁধে। এদের আমরা কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছি। তাদের উপস্থিতি এসব এলাকাকে অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।পাহাড়-জঙ্গল কেটে বসতি হচ্ছে। ওই এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। মানবিক কারণে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা চাই তারা যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফিরে যাক।এসব বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেখভাল করার পাশাপাশি অতি দ্রুততার সঙ্গে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে। এরইমধ্যে সরকার তিন হাজার ৮৬৮টি বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করেছে। আরও ১ হাজার ৩৫০টি করা হবে। এগুলো সাধারণত স্কুল বা অফিস হিসেবে ব্যবহার হয়। তবে সাইক্লোন বা জলোচ্ছ্বাসের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া দুর্যোগে যেন সুপেয় পানির অভাব না হয় সেজন্য বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এভাবে সরকার বিভিন্ন সময় উপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব কমে এসেছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন,শুধু নিজের দেশের কথাই নয় বিশ্বের সব দুর্যোগপ্রবণ দেশের মানুষের কথা ভবি আমি। আর এজন্যই জলবায়ু অভিযোজন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সভায় যে সুপারিশগুলো উঠে আসবে সেগুলো যেন সব দেশ গ্রহণ করতে পারে সে বিষয়টির ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here