দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু :
বোয়ালখালী উপজেলায় আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। সোনালী ধানের ডগায় জমা শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীত আসন্ন। সন্ধ্যা হতেই চারদিকে জমাট হয়ে নামছে কুয়াশা। সারারাত ঝরা কুয়াশায় সিক্ত পাকা ধান। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে দল বেঁধে কৃষকেরা কাচি নিয়ে নামছে ধান ক্ষেতে। কৃষকের পরিশ্রম আর অনুকূল আবহাওয়ায় আমনের ফলনের সম্ভাবনাকে করেছে উজ্জ্বল। কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। ঘরের গোলাভরা নতুন ধানে হবে নানান পিঠাপুলি।

বাতাসে এখন শীতের আমেজ। গত ক’দিন ধরে বইছে উত্তুরে হাওয়া। শীতের এই ছোঁয়া কৃষকের মন-প্রাণেও দিয়েছে খুশির জোয়ার। শীতের কুয়াশা জমা শিশির বিন্দু ধানকে হৃষ্টপুষ্ট হতে সহায়তা করছে। রোপা আমনের যেসব ধান একটু বিলম্বে আসে শীতের এই কুয়াশায় ধানেও প্রাণ এনে দিয়েছে। ধানের ভেতরের চাল শক্ত হতে সাহায্য করছে আর পোকামাকড়ের শঙ্কাও কেটে গেছে বলে জানায় কৃষকরা। তবে গেলবার আমনের ভালো দাম না পাওয়ায় এবারও কৃষকরা কিছুটা শংকিত ন্যায মূল্য নিয়ে।

উপজেলার কয়েকটি বিল ঘুরে দেখা গেছে, পুরোদমে কৃষকরা আমন ধান কাটায় লেগেছেন। কষ্টের ফসল ঘরে তোলার আনন্দে মাতোয়ারা। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ আমন ঘরে তুলেছে কৃষকরা। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমন পুরোপুরি ঘরে উঠবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গৌতম চৌধুরী। তিনি বলেন, আমন চাষে কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ সহোযোগিতা দিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। ফলে আমরা আশা অনুরূপ ফসল ঘরে তুলতে পারছি।

শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কফিল উদ্দীন বলেন, আমন চাষে কৃষকের আগ্রহ থাকলেও ধান বিক্রিতে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেকে চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সরকারী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করি যাতে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ না হারান।

আইপিএম সভাপতি মো. সেকান্দর জানান, এবার প্রায় ৫ একর জমিতে আমন চাষ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। তবে চাষাবাদে খরচের সাথে ফলনের সমন্বয় হচ্ছে না। সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। একই কথা জানিয়েছেন আইপিএম সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বিকম, কৃষক রায়হান, আবদুল কাদের ও মো. শামসুল আলম।

বোয়ালখালী উপজেলায় এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৫শত হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪শত ৮০হেক্টর। প্রাকৃতিক কোনো দূর্যোগ না হওয়ায় এবারের আমন ধান ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ।

তিনি জানান, অতিবৃষ্টি, খরা, রোগ-বালাই তেমন একটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কৃষকের সামনে, প্রাকৃতিক দূর্যোগ তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। এ বছর আমন চাষে ভালো ফলন হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here