হাসপাতাল অর্থোপেডিক বিভাগের ১৬ নম্বর বেডে শুয়ে আছে রোগী জিকরা মালিক। তার পা প্লাস্টার করে ট্রাকশনে ঝোলানো হয়েছে। পাশেই শুয়ে আছে তার পুতুল ‘পরী’। পুতুলটিকেও একইভাবে পা প্লাস্টার করা রয়েছে!

বিষয়টি অবাক লাগলেও এমন কাণ্ড ঘটাতে বাধ্য হয়েছেন নয়াদিল্লির লোক নায়ক হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কারণ বন্ধু ‘পরী’র পা একইভাবে প্লাস্টার না করলে কিছুতেই ১১ মাস বয়সী শিশুটি চিকিৎসা করাবে না। শেষপর্যন্ত চিকিৎসকরা তার পুতুলের পায়েও প্লাস্টার করতে বাধ্য হন!

চঞ্চল শিশুটির খাট থেকে পড়ে গিয়ে দু’পা ভেঙে গেছে। হাসপাতালে বেডে ঝুলন্ত অবস্থায় পুতুলকে পাশে নিয়েই দিনরাত কাটছে তার। এমন দৃশ্য দেখে যে কারও মায়া লাগবে। পা ঝোলানো অবস্থায় নিজেই ফিডিং বোতল ধরে খাচ্ছে। বেডে একইভাবে শুয়ে তারই সাইজের পুতুল। তারও পা একইভাবে ট্রাকশনে ঝোলানো। শুধু তার মুখে ফিডিং বোতল নেই।

চিকিৎসকরা বলছেন, থাইয়ের হাড় ভেঙেছে শিশুটির। সেটা সারাতে গেলে গোল ট্রাকশনের প্রয়োজন। কিন্তু ভয়ে, ব্যথায় শিশুটি কিছুতেই পায়ে প্লাস্টার করতে দিচ্ছিল না। পরে বাধ্য হয়ে তাকে মানাতে পুতুলের পায়ে প্রথমে প্লাস্টার করে ট্রাকশন দেন তারা। পুতুলটিকে দেখে শান্ত হলে তারপর শিশুটির পায়ে প্লাস্টার বাঁধতে দেয়।

শিশুটির মা ফারিন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জানান, বাড়িতে পাঁচ সেকেন্ডের জন্যও চুপ থাকে না তার সন্তান। চিকিৎসকরা বলেছিলেন সোজা না রাখলে পা ঠিক হবে না। পরে তাকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। প্রথমে হাসপাতালে কিছুতেই থাকবে না সে। কিন্তু পুতুলকে আনার পর শান্ত হয় সে। সে খুশি মনে পুতুল বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে! রোগীর ভালো করতে গিয়ে এই প্রথম পুতুলের চিকিৎসা করলেন কোনো চিকিৎসক।

তবে, এনিয়ে একটুও ক্ষোভ নেই চিকিৎসকদের। তারা হাসি মনেই চিকিৎসা দিচ্ছে দু’জনের।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here