রাজধানী ঢাকা শহরকে বায়ুদূষণ ও ধুলামুক্ত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় রাখতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সরকারের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মরণ কুমার চক্রবর্তীকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাজধানী ঢাকাকে পরিস্কার রাখতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ গাজীপুর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ধুলামুক্ত ও বায়ুদূষণ করতে কি কি প্রয়োজন রয়েছে সে সর্ম্পকে একটি প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়রের প্রতিনিধি, পরিবেশ, অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং রাজউকের প্রতিনিধি।

সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাজধানী ঢাকাকে বায়ুদূষণ মুক্ত রাখতে সব সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। ধুলামুক্ত পরিবেশ চাই। এ ক্ষেত্রে মেট্ররেল, ওয়াসা, ইটভাটাকে তাদের নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।’ যারা রাস্তায় ময়লা ফেলবে, নিয়ম-কানুন না মেনে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নির্মাণে যে ধুলা-বালুর সৃষ্টি হচ্ছে তা কেন হবে? তারা তো একটি বেষ্টনীর ভেতর থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালননা করছে।’ মন্ত্রী মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে আরও সর্তক অবস্থায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আহ্বান জানান।

মন্ত্রী গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা বায়ুদূষণ ও ধুলা-বালি সৃষ্টির কারণগুলো ছবিসহ তুলে ধরেন। আমাদের ভালো কাজগুলোও আপনারা প্রচার করবেন। ভালো-খারাপ মিলে সংবাদ প্রচার হলে জনসচেতনতা আরও বাড়বে।’

সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত প্রত্যেকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তাদের কার্যক্রমের কথা শোনেন। পরিবেশ অধিদফতরের ডিজির বক্তব্যে মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনাদের আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে।’

মন্ত্রীর বক্তব্যের পরই পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি জানান, ঢাকার চারপাশে ৩২৭টি ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইটভাটা বন্ধ করতে হলে খরচ বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যন্য সংস্থার প্রতিনিধির প্রয়োজন হয়ে থাকে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় সহায়তা করবে।’

এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজের জন্য ঠিকাদারদের মেইনটেইনেন্স খরচ দেওয়া হয়। এরপরেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদাররা যে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছেন, সেই অবকাঠামো ঘিরে কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন করতে পারেন না। তাই তাদের দিয়েই জরিমানা শুরু করবো। নিজের ঘর থেকে জরিমানা শুরু করার পর অন্য কেউ রেহাই পাবে না।’

সভায় গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন, ঢাকা দক্ষিণ ও নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়রের প্রতিনিধি, ডিপিডসি, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here