করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে সেই কমিটিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা তাকেই জানানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় একটি জাতীয় কমিটির গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে আমাকে সেই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। কিন্তু এ কমিটিতে যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হচ্ছে, সেগুলো আমার কিছুই জানা নেই।

সোমবার (৬ এপ্রিল) মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) ভবনের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জরুরি এক সভায় এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে জাতীয় কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কিন্তু কখন কারখানা খুলবে, মসজিদ খোলা থাকবে কি না— এসব বিষয় জাতীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয় না। স্বাস্থ্য বিষয় ছাড়া আমার সঙ্গে কোনো কিছু আলোচনা হয় না। আমি সাংবাদিকদের জবাব দিতে পারি না।

তিনি বলেন,আমি সাংবাদিকদের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। তাদের সদুত্তর দিতে পারি না। শুধু দেশে না, বিদেশ থেকেও অনেক সাংবাদিকরা আমার কাছে জানতে চায়। আমি এ কমিটির হেড হয়ে কেন এ বিষয় জানি না, সে দোষ দেওয়া হয়।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমি সচিব সাহেবকে বলেছি, এ বিষয়ে আলোচনা করে আমাদের কাছে থেকে সিদ্ধান্ত না নিলেও অন্তত পরামর্শ করতে পারেন। তাহলে আমরা আমাদের মতামতটা দিতে পারি।

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন দেশের স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিনিধিরা। সভায় নিমস-এর পরিচালক ডা. দীন মোহাম্মদ বর্তমান পরিস্থিতে উদ্বেগ জানিয়ে এখনই দেশে কঠোর অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর জানান, সামনে কঠিন সময় আসছে। এখনই পুরো দেশে লকডাউন করা জরুরি। তা না হলে হলে এই ভাইরাস আগামী ১০ দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

পেশাজীবি সংগঠনের নেতারা দেশের মানুষের কথা বিবেচিনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার অনুরোধ জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সবার কথা শোনেন ও দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবেন বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। সভায় চিকিৎসক পরিষদের নেতারা চিকিৎসদের সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাচিপ সভাপতি ইকবাল আর্সলান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আজিজসহ বিভিন্ন অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেতাসহ অন্যন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here