সারাদেশ আসবে জিও কোডের আওতায়


দেশের সকল এলাকা ‘জিও কোডের’ আওতায় আনা হচ্ছে। এতে জমির এলাকা ভিত্তিক নাম পরিহার করে সারাদেশে একই একক ব্যবহার করা হবে। কড়া, গণ্ডা, কানির হিসেব আর থাকছে না। জমির ক্ষেত্রে শুধু শতাংশ কাঠা বিঘা ও একর থাকবে। সারাদেশে একই পরিমাপ থাকবে। সব জেলা উপজেলা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম সিটি কর্পোরেশন, মহল্লার বাংলা ও ইংরেজী নাম বানানসহ প্রকাশ করবে সরকার। সব সকল নামের আইনী একটি ভিত্তিও দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, সর্বজনীন ব্যবহারের জন্য এ সংক্রান্ত প্রকাশনা, নির্দেশনা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে, যাতে সবাই একই ধরনের বানান, নাম বিশুদ্ধভাবে লিখতে পারে।
একাধিক সূত্র জানায়, জমির একক হলো শতাংশ। এর ইংরেজী হলো ডেসিমেল। কিন্তু দেশের কোথাও কোথাও শতাংশ, কোথাও ডেসিমেল থাকলেও পাশাপাশি চালু রয়েছে কড়া গ-া কানি ইত্যাদি। ১.৬৫ শতাংশে এক কাঠা। ৩৩ শতাংশে এক বিঘা। দেশের কোথাও কোথাও ৫০ শতাংশে, কোথাও আবার ৫২ শতাংশে আবার কোথাও বা ৩৩ শতাংশে বিঘার প্রচলন রয়েছে। জিও কোড আধুনিকায়ন হলে দেশের সব এলাকায় একই হিসাব চলবে। সেটি হবে একশ শতাংশে এক একর, ১.৬৫ শতাংশে এক কাঠা, ২০ কাঠায় এক বিঘা, আবার ৩৩ শতাংশে এক বিঘা।
প্রশাসনিক ওয়ার্ডের ভেতরে মহল্লা থাকলেও পাশাপাশি রয়েছে পাড়াও। যেমন ভদ্রপাড়া, উকিল পাড়া, অফিসারপাড়া। এ ভাবে বিভিন্ন, ধরনের নাম দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচলিত থাকার প্রেক্ষিতে অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। তবে এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন এলাকায় প্রচলিত নাম আর সরকারী নাম এক নয়। ওগুলো আঞ্চলিক নাম। জিও কোডে আঞ্চলিক নাম পরিহার করে প্রমিত নামের বানান এবং আইনী ভিত্তি দেয়া হবে। এতে প্রচলিত বিভ্রান্তি দূর হবে। অর্থাৎ এটি কার্যকর হলে কাগজে-কলমে কোথাও আর বিশেষ কোন পাড়া থাকবে না।
সূত্র মতে, প্রশাসনিক বিন্যাস অনুযায়ী জিও কোড সিস্টেম আধুনিকীকরণ করে জিও কোডের গুণগত মানোন্নয়ন ও বিদ্যমান জিও কোড সিস্টেমকে রিলেশনাল ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (আরডিবিএমএস) উন্নত করা হবে। এই কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বাংলাদেশ জিও কোড বই এবং বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশের জন্য কাজ করছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ জিও কোড বই এখনও প্রকাশিত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
এই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী দেশের ৬৪ জেলার জন্য তৈরি করা জিও কোডে ইউনিটসমূহের নাম এবং বাংলা ইংরেজী বানানের আইনগত বৈধতাসহ সর্বজনীন ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ জিও কোড বই আকারে প্রকাশ করা হবে। বিবিএস জিও কোড বই আকারে প্রকাশের আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদনের জন্য পত্র দেয়া হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রশাসনিক ইউনিটগুলো জনপ্রশাসন, ভূমি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও জননিরাপত্তা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে। কারণ সব মন্ত্রণালয়ই মূলত জিও বোডের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশে ১৯৭৮ সালে জিও কোড প্রস্তুত করে। ’৮১ সালের আদম শুমারিতে প্রথম এই কোড ব্যবহৃত হয়। দেশের প্রতিটি ভৌগোলিক / প্রশাসনিক এলাকার জন্য বা একাধিক সংখ্যা দিয়ে কোড নির্ধারণ করা থাকে। সর্বশেষ বানান ও তথ্য সমেত এবারের জিও কোড প্রকাশ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here