চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী, তা নির্ধারণ হবে আজ। একই সাথে এই আসনে মহাজোট থাকবে নাকি আওয়ামী লীগ একক নির্বাচন করবে সেই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হবে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান হবে। আজ সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি নমিনেশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই সভা থেকে চট্টগ্রাম-৮ আসনের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।

দলীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ আংশিক) আসনটি মহাজোটের। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট গঠনের পর বিগত সংসদ নির্বাচনগুলোতে এই আসনটি জাসদ নেতা মইন উদ্দীন খান বাদলকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। গত ৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনের মহাজোট থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য মইন উদ্দীন খান বাদল মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আসনটিকে শূন্য ঘোষণা করে গত ১ ডিসেম্বর উপ নির্বাচনের তফসিল ঘোষাণা করে নির্বাচন কমিশন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৩ জানুয়ারি এই আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে এই আসনের প্রার্থীদের ফরম বিক্রি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরই প্রার্থীরা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে পারবেন।

ইতোমধ্যে যারা ফরম নিয়েছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের পক্ষে একজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ফরম সংগ্রহকারীরা হলেন- দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন, নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমন আল মাহমুদ, কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, প্রয়াত সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা বাদল ও এসএম কফিল উদ্দীন।

এর আগে মহাজোটের শরিক দল হিসেবে জাসদ সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদলকে আসনটিতে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে জাসদ বিভক্ত হয়ে গেছে। জাসদের নেতা হিসেবে মইন উদ্দীন খান বাদলও নেই। তাই মহাজোটে জাসদের অংশীদারিত্ব ঠিক কতটুকু থাকবে তা নিয়ে নানা যোগ-বিয়োগ শুরু হয়েছে। অবশ্য রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও মইন উদ্দীন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান বাদলের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ঘনিষ্টতা এক্ষেত্রে কোনো নিয়ামক হয়ে উঠে কিনা তাও আজ সন্ধ্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যরাই এই বোর্ডের সদস্য। এখানে চট্টগ্রাম-৮ আসন নিয়ে বিস্তারিত আলাপ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩, ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়ন, পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়ন, পূর্ব গোমদন্ডী ইউনিয়ন, শাকপুরা ইউনিয়ন, সারোয়াতলী ইউনিয়ন, পোপাদিয়া ইউনিয়ন, চরণদ্বীপ ইউনিয়ন, আমুচিয়া ইউনিয়ন ও আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৯৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৯২২ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪ জন। বোয়ালখালী উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার। বাকি ৩ লাখ ১১ হাজার ৯৮৮ জন ভোটার নগরীর উপর্যুক্ত ওয়ার্ডের। এই আসনে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৮৯টি। আসনটিতে উপ-নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহৃত হবে বলে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম- ৮ আসনের উপ-নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী ১২ ডিসেম্বর। বাছাই ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৩ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হবে। গতকাল পর্যন্ত আসনটির উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নফরম সংগ্রহ করেছেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here