শুকলাল দাশ: চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে যাত্রী বেড়েছে আগের তুলনায় দ্বিগুণ। সেই সাথে বেড়েছে আয়ও। কিন্তু বাড়েনি ট্রেনের বগি। একদিকে ভাড়া কম, অন্যদিকে যানজট এড়িয়ে নিরাপদে ভ্রমণের জন্য এই দুই রুটের যাত্রীরা আরো বগি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। যাত্রী বাড়ায় গাদাগাদি করে রেলবগিতে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে জানান এই রুটের নিয়মিত যাত্রী শাহরিয়ার মনির জিসান।
এদিকে দীর্ঘদিনের পুরনো এই রেলপথ দুটি যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এবং আগের তুলনায় আয় বেড়ে যাওয়ায় বগি বাড়ানোর কথা ভাবছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। এই ব্যাপারে রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার (পূর্বাঞ্চল) বোরহান উদ্দিন জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে চলাচলরত প্রতিটি ট্রেনে যাত্রী বেড়েছে। আয়ও হচ্ছে আগের তুলনায় বেশি। রেলপথও ভালো হয়েছে। এখন প্রতিটি ট্রেনে ৬টি করে বগি রয়েছে। আগামী ১/২ মাসের মধ্যে বগি আরো বাড়ানো হবে। ভাড়া কম হওয়ায় এই দুটি রুটে ট্রেনের প্রতি যাত্রীদের আগ্রহ বেড়েছে। সেদিকে আমাদের খেয়াল আছে।
তিনি জানান, চট্টগ্রাম শহর থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রয়েছে ১৭টি স্টেশন। এর মধ্যে রয়েছে কালুরঘাট সেতুর পর গোমদণ্ডি, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, খানমোহনা, পটিয়া, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চন নগর, খাঁনহাট, হাশিমপুর ও দোহাজারী স্টেশন। স্টেশনগুলো নতুন ভাবে সংস্কার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের স্টেশন মাস্টাররা জানান, এখন যাত্রীরা কেউ টিকিট ছাড়া ট্রেনে চড়েন না। নিজে তো টিকিট কাটেনই, পাশাপাশি অন্য যাত্রীরাও টিকিট নিয়েছে কিনা যাচাই করে।
গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের যাত্রীরা এখন অনেক সচেতন। টিকিট ছাড়া কেউ ট্রেনে ভ্রমণ করেন না। এখন এই পথে ৫ থেকে ৬টি বগি নিয়ে প্রতিদিন দুই জোড়া যাত্রীবাহী রেল যাতায়াত করছে।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার রেলপথটি রেলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট। এক সময় চার জোড়া যাত্রীবাহী রেল আসা-যাওয়া করত। কিন্তু ট্রেনের কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে ধীরে ধীরে সার্ভিস কমিয়ে দেয়া হয়। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশের রেলের নেটওয়ার্ক বাড়ানোর পাশাপাশি পুরনো রেল লাইনগুলো নতুনভাবে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেল লাইন সেতু, রেল গেইট ও স্টেশন নির্মাণের মধ্য দিয়ে নতুন রূপ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রামবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর আরো একজোড়া করে রেল যুক্ত করা হয় দুই রুটে। ফলে দুই রুটে দুই জোড়া রেল সকাল-বিকেল চলাচল করছে এখন।রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দোহাজারী রুটে টিকিট বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮০ টাকার ও যাত্রী ছিলেন প্রায় ৬০ হাজারের মতো।
তথ্যসুত্র:দৈনিক আজাদী
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here