বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথায় তখন সকাল। চারপাশে প্রতিদিনের সামান্য ব্যস্ততা, কিন্তু হঠাৎই ভেঙে গেল সেই স্বাভাবিকতা। উৎসুক জনতার ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠলো পুরো এলাকা। এই দৃশ্য শহরের মানুষ আগে কখনো দেখেননি— ছোট্ট একটি গাছে ধরে আছে ৬২টি কমলা। ফলসহ কমলা গাছটির দাম চাওয়া হয়েছে ১৪ হাজার টাকা।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) এমন একটি কমলা গাছ বিক্রি করতে এসে হৈ চৈ ফেলে দেওয়া বিক্রেতা হলেন মো. মুনছুর আলী। প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি মাটিতে লাগানো এই কমলা গাছটি ভ্যানে করে বিক্রি করতে এনেছিলেন বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ইউনিয়নের ছোট সরলপুর উত্তরপুর গ্রামের এই বাসিন্দা।

সকালে ভ্যানে করে কমলা গাছটি শহরের সাতমাথা এলাকায় বিক্রির জন্য আনার পর তাকে ঘিরে ধরেন লোকজন। দুপুর পর্যন্ত চলে দরদাম। তবে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত এর দাম উঠলেও বিক্রেতা মুনছুরের কথা, ‘১৪ হাজারের কমে আমি শখের কমলা গাছটি বিক্রি করবো না।’

তবে শুরু থেকেই চারা বা নার্সারি ব্যবসায়ী ছিলেন না মুনছুর। সিমেন্ট দিয়ে ছোট আকারের খুঁটি তৈরির ব্যবসা ছিলো তার। কয়েক বছর আগে সে ব্যবসায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হওয়া পর শুরু করেন ফলের চারা বিক্রির ব্যবসা। প্রতিবেশি শফিকুল ইসলাম তাকে এ বিষয়ে আগ্রহী করেন। এখন দু’জন উত্তরের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁওসহ বিভিন্ন জেলায় ফলের চারা বিক্রির ব্যবসা করছেন।

এর পাশাপাশি মুনছুর আলী শখের বশে নিজের দ্বিতল বাড়ির ছাদে ফলের বাগান তৈরি শুরু করেন। ছাদে প্লাস্টিকের বালতি ও ড্রামে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগান। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- লেবু, বারমাসী আম, পেয়ারা, বড়ই, মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ। সেখান থেকেই একটি কমলা গাছ তিনি ব্যবসায়িক অংশীদার শফিকুলের ভ্যানে বিক্রি করতে শহরে নিয়ে এসেছেন।

মুনছুর আলী জানান, এই গাছটি ছাতকি জাতের কমলার। ছোট্ট গাছে এত বেশি কমলার ফলন দেখেই লোকজনের আগ্রহ বেড়েছে। গাছে রয়েছে ৬২টি কমলা। কাঙ্ক্ষিত দাম না মিললেও কমলা গাছটি নিয়ে সবার আগ্রহে অভিভূত তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here