দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্তের পর ‘আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘আপাতত স্কুল-কলেজ স্বাভাবিকভাবে চলবে। তবে সারাদেশের স্কুল ও কলেজগুলোতে হাত ধোয়ার জন্য সরকারিভাবে বিনামূল্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় কমিটির বৈঠক শেষে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ রোগে মৃত্যুঝুঁকি ইবোলার চাইতে অনেক কম, শতকরা তিন শতাংশেরও কম। তবে এ ভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধোয়াসহ প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে জানাতে হবে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তাদের পরিবারগুলোতেও সতর্কতামূলক বার্তা পৌঁছাতে হবে।

জাতীয় কমিটির বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে স্কুল ও কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হাত ধোয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবানের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেয়া হয়। বর্তমান করোনাপরিস্থিতিতে আপাতত স্কুল স্বাভাবিকভাবে চলবে। তবে পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গৃহীত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশফেরত বিশেষ করে করোনাভাইরাসে বেশি আক্রান্ত ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো থেকে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজন হলে কোয়ারেন্টাইনে (সংক্রমণরোধে আলাদাভাবে) রাখার ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

একই সঙ্গে মন্ত্রী খেলাধুলা, ধর্মীয় বা সামাজিক প্রোগ্রাম সীমিত আকারে করার অনুরোধ জানান। বলেন, ‘এগুলো না করলেই ভালো– এ বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাবল টিভিতে স্থানীয়ভাবে প্রচারণা চালানোরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

করোনা প্রতিরোধের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশে আসছেন, আমি বলব, এই মুহূর্তে আপনারা দেশে আসবেন না। নিজ নিজ স্থানে থাকুন। এটা আগেও আমরা বলেছি। অ্যাম্বাসেডরদেরও (রাষ্ট্রদূত) আমরা নির্দেশনা দিয়েছি- তাদের জন্য সেফ জোনের ব্যবস্থা করতে।

গত রোববার (৮ মার্চ) সরকারের আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়,বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ওই তিনজন ছাড়া আরও দুজনকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

সোমবার দুপুরের প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরও চারজনের পরীক্ষা হয়েছে। তবে পরীক্ষায় কারোর মধ্যেই করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি । তার মানে এ পর্যন্ত সর্বমোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিনজনই।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here