চট্টগ্রাম-৮(চাঁন্দগাও-বোয়ালখালী) আসন থেকে পরপর তিনবার নির্বাচিত মহাজোটের (জাসদ-বাদল) সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই তাঁর নির্বাচনী এলাকাসহ পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এই আসনের উপ নির্বাচন নিয়ে। গত ৭ নভেম্বর ভোর ৫টায় ভারতের বেঙ্গালুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মঈন উদ্দিন খান বাদল।

তাঁর মরদেহ ভারতের বেঙ্গালুর থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকা হযরত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। আজ শনিবার রাতে বোয়ালখালীস্থ সারোয়াতলী গ্রামে শেষ নামাজে জানাযার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। তাতে নির্বাচিত হবার পর ১১ মাসের মাথায় ইন্তেকাল করলেন বাদল।

বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের প্রয়াণের পরপরই এ আসনে উপ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার বিষয়টি শুনতে অনেকটা শ্রুতিকটু মনে হলেও বাস্তবিক অর্থে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বমহলে নানানভাবেই তা আলোচিত হচ্ছে। গতকাল সারাদিনও এই আলোচনাটি বেশ চাউর হয়ে উঠে। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ালীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাকে এই আসন থেকে উপ নির্বাচনে মনোনয়ন দিচ্ছেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।

উপ নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে নানামুখী আলোচনা-গুঞ্জন শোনা গেলেও সবার আগে যে নামটি উচ্চারিত হচ্ছে তা হলো প্রয়াত সাংসদের সহধর্মিনী সেলিনা খানের। আওয়ামীলীগের শীর্ষ মহলে বেশ ভালোই যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনেও বাদলের শারীরিক অসুস্থতার কথা উঠলে তখন তাঁর স্ত্রী সেলিনা খানের মনোনয়নের কথা বেশ জোরে শোরে শোনা গিয়েছিল। তাই বিশেষজ্ঞ মহলের ধারনা শেষ পর্যন্ত স্বামীর আসনে উপ নির্বাচনে তিনিই মনোনয়ন পেতে পারেন।

এদিকে এই আসনে গতবার আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তারা এবারও মাঠে থাকবেন বলে জানা গেছে।

যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমদ, নগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, কুয়েতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালামের ছোট ভাই এস এম আবু তৈয়ব, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন।

নগরীর ৫টি (৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭) ওয়ার্ড ও বোয়ালখালীর শ্রীপুর খরণদ্বীপ বাদে অন্যান্য ৯ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় এলাকা। গত ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের শরীক জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনুদ্দিন খান বাদল নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন এ আসনে।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতাত্তোর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের মরহুম এম কফিল উদ্দিন, ৭৯ ও ৯১ সালে বিএনপির ধানের শীষের প্রতীকে মরহুম সিরাজুল ইসলাম, ৮৬ ও ৮৮সালে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙল প্রতীকে এবং ৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে এম মোর্শেদ খান নির্বাচিত হন। এরপর তিনবার নৌকা প্রতীকে মহাজোটের শরীক জাসদের মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি নির্বাচিত হন। এই আসনে মোট ভোটার ১,৫৯,৮২২ জন। এরমধ্যে পুরুষ-৮২৫৮৪ ও মহিলা ৭৭২৩৮ জন।-খবর দৈনিক আজাদী

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here