প্রতিনিধি:
যোগাযোগ ব্যবস্থায় নাজুক পরিস্থিতি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় এলাকাবাসী দুষছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। বিশেষ করে পূর্ব শাকপুরার সড়কগুলো কবে সংস্কার হয়েছে ঠিক করে কেউই বলতে পারছেন না। সে সাথে রয়েছে এই ইউনিয়নে মাদকের আগ্রাসন। সন্ধ্যার পর মাদকের হাট বসে এ ইউনিয়নের পাড়ার অলিতে গলিতে।
খুব সহজভাবে ইয়াবা, চোলাই মদ, গাঁজা পৌঁছে যায় যুব-কিশোর সমাজে। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বপন দে জানান, এলাকায় ভোটের জন্য এখন আর চেয়ারম্যান আসে না। তাদের ভোটের প্রয়োজন নেই। তাই সড়কের উন্নয়নও করতে হয়না। ঘুরে দেখা গেছে, দশভূজা মাতৃমন্দির সড়ক, তেলি পাড়া সড়ক , ব্যাংক কালী বাড়ী সড়ক, ধর্মানন্দ বিহার সংলগ্ন পীর রশিদ আহমদ সড়ক, আনিছ তালুকদার ছৈয়দুল ইসলাম সড়কের অবস্থা নাজুক। পায়ে হাঁটাও দুষ্কর। কথা হয় সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন কুমার ঘোষের সাথে। তিনি বলেন, এ সড়কে প্রায় ৩০ বছর আগে ইট বসে ছিল। এরপর আর সংস্কার হয়নি।
দশভূজা মাতৃমন্দির গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেবি দাশ বলেন, এ সড়কগুলো ঠিক কবে সংস্কার হয়েছে জানা নেই। স্থানীয় বাসিন্দা লিটন দে বলেন, এ সরকার আমলে অন্যান্য উপজেলার যে উন্নয়ন হয়েছে। তার ছিটে ফোঁটা উন্নয়ন হয়নি পূর্ব শাকপুরায়। এ ওয়ার্ডে ১০টি মন্দির, ২টি মসজিদ, ১টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অধিকাংশ সড়কে পায়ে হাঁটাও কঠিন। বর্ষার পানিতে কাদায় সয়লাব থাকে সড়ক। শুকনো মৌসুমে এবরো থেবড়ো সড়কে থাকে ধুলোর রাজত্ব। স্থানীয় ইউপি সদস্য শ্যামল বিশ্বাস টিসু বলেন, পূর্ব শাকপুরায় আটটি সড়ক রয়েছে। প্রতিটি সড়কের অবস্থা নাজুক।
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মোনাফ বলেন, প্রয়াত সাংসদ মঈন উদ্দীন বাদলের আমলে পশ্চিম শাকপুরা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সড়কগুলো সে সময়ে সংস্কার করা হয়েছিল। শাকপুরা বড়ুয়ার টেক হতে আমৃতলা পর্যন্ত বাইপাস সড়কের কাজ শুরু হবে। সড়কটি হয়ে গেলে চৌমুহনীতে যানবাহনের চাপ কমবে। এ ছাড়া ঘোষখীল হয়ে পুলিন চেয়ারম্যানের বাড়ী পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, পূর্ব শাকপুরার সড়ক নিয়ে বড় সমস্যা। প্রতিটি ঘরে ঘরে রাস্তা। তেলি পাড়া সড়ক দিয়ে চলাচল করে অল্প কিছু মানুষ। চার-পাঁচ জন মানুষের জন্য সড়ক করে দিয়ে লাভ কি।
এ সময় তিনি বলেন, আরাকান সড়কের চৌমুহনীতে সপ্তাহের রবি ও বুধবার বাজার বসে। এতে প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয় ওই বাজারের দিনগুলোতে। ইউপি চেয়ারম্যান জানান, শাকপুরা চৌমুহনী বাজারের নির্ধারিত জায়গা না থাকায় সড়কের ওপর বাজারটি বসে। অথচ সর্বোচ্চ ডাক হয় এ বাজারটি। উপজেলা প্রশাসন যদি বাজারটি উন্নয়নে কাজ করে তাহলে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ে লাভবান হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোনাফ অভিযোগ করে বলেন, শাকপুরায় মাদকের আগ্রাসন সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ৪নং ওয়ার্ডের প্রায় ঘরে মাদক ব্যবসায়ী। এ ব্যাপারে উপজেলার মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার বলেও কোনো প্রতিকার পায়নি।
তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন, পুলিশ সাধ্যমতো মাদক নিমূর্লে কাজ করে যাচ্ছে। সাড়াঁশি অভিযান পরিচালনা করে মাদক উদ্ধার ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার পূর্বক মামলা রুজু করা হচ্ছে।