ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’, ৪-৫ দিনের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে উপকূলে।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘আম্ফান’।
শনিবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ৯টায় আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়তে তিন থেকে চারদিন সময় লাগবে।’
এদিকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়া অধিদফতর তাদের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও সামান্য পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই উত্তাল।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে ভারতের আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের শক্তি বেড়েছে। আজ রোববার ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। তারপরে উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোতে পারে।
ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সোমবার নাগাদ ঘূর্ণিঝড় দিক পরিবর্তন করতে পারে। মূলত কতটা গতিতে ঘূর্ণিঝড় বাঁক নিচ্ছে, তার ওপরেই নির্ভর করবে ঘূর্ণিঝড়টি কোথায় আছড়ে পড়বে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রূপে ভারতের উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশের বরিশাল উপকূলের ভেতরে যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারে।