রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, নিরাপদ ও উন্নত সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের অন্যতম নিয়ামক। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি আইনের প্রয়োগ ও আইন মেনে চলতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, সমপ্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত শিক্ষার্থী ও যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ সড়কে দুর্ঘটনা, বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রথাগত সড়ক ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালে সংঘটিত শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে গণআন্দোলনের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান, ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, অবৈধ যানবাহন সড়ক নিরাপত্তার যে ঝুঁকি তৈরি করে, সড়ক পরিবহন মালিক–শ্রমিক তা উপলব্ধি করে এ থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে নিরাপদ সড়কের প্রত্যাশা পূরণ অনেকটাই সহজ হবে।
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে বিআরটিএ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এছাড়াও বিশেষ অতিথি থাকবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
প্রায় তিনদশক আগে এই দিনে বান্দরবানে শুটিংয়ে থাকা স্বামী ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের অদূরে চন্দনাইশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জাহানারা কাঞ্চন। সেই থেকে নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করে আসছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়’ এই স্লোগান নিয়ে গড়ে তুলেন সামাজিক সংগঠন–নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। এই আন্দোলেনের ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সাল থেকে দেশে দিবসটি জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে।
দিবস উপলক্ষে সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক চাই–নিসচাও মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল দশটায় ডায়মন্ড সিমেন্টের পৃষ্ঠপোষকতায় ও দৃষ্টি চট্টগ্রামের সহযোগিতায় নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ডায়মন্ড সিমেন্ট–নিসচা আন্তঃস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও শিক্ষার্থী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল জেলা ৩১৫–বি৪ বাংলাদেশের জেলা গভর্নর লায়ন কোহিনূর কামাল এমজেএফ এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর এস. এম. নসরুল কদির। এছাড়াও এসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশার দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
ডায়মন্ড সিমেন্ট–নিসচা আন্তঃস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও শিক্ষার্থী সমাবেশে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন সভাপতি এস.এম. আবু তৈয়ব ও সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ সাজীব।