বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহবুব কবির মিলনকে সরিয়ে তার স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিকমাধ্যম সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মাহবুব কবির মিলনকে স্বপদে রাখতে সোমবার (০৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানবন্ধন করেছে সাধারণ মানুষ।

মাহবুব কবির মিলনকে দুই কারণে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন, বেসরকারি ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস) এর নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
সোমবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত ছয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৪ কনসাইনমেন্ট নিষিদ্ধ এমবিএম আটকে দেয়ায় এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে জনবল নিয়োগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশ না রাখায় তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পলাশ মাহমুদের স্ট্যাটাসটি পাঠকের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো;
‘দুই কারণে চেয়ার হারাচ্ছেন মাহবুব কবির স্যার!
১. গত ৬ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি নিষিদ্ধ ‘মিট অ্যান্ড বোন মিল’ (এমবিএম) এর ৪৪টি কনসাইনমেন্ট আটকে দিয়েছে ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ (বিএসএফএ) ও চট্টগ্রাম কাস্টমস। যেখানে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ৯ হাজার মেট্রিক টন এমবিএম রয়েছে। যার মূল কারিগর ছিলেন কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব কবির মিলন। এমবিএম পোল্ট্রি ও অন্যান্য প্রাণি খাদ্যে মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। সেখান থেকে এই ‘নিষিদ্ধ বিষ’ আমরা খাই। এই বিষ ছড়িয়ে ছিল গোটা দেশে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান মাহবুব কবির।
চট্টগ্রাম বন্দরে কনসাইনমেন্টগুলো খালাস করার জন্য বহু চেষ্টা হয়েছে। কয়েকজন কোর্টে রিটও করেছে। কিন্তু মাহবুব কবিরদের চেষ্টায় তারা হেরে যায়। এখন তাদের একমাত্র ভরসা মাহবুব কবিরকে সরিয়ে দেয়া। সেই চেষ্টায় তারা আপাতত সফল হয়েছে। মাহবুব কবিরকে চেয়ারম্যান থেকে সরিয়ে সেখানে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের আদেশ হয়েছে।
২. সম্প্রতি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে জেলায় জেলায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ২০৮ জন জনবল নিয়োগ দিয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ছিলেন মাহবুব কবির। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগে এক ‘বস’ তার কাছে রেজাল্টের তালিকা চেয়েছিলেন। তারা হয়তো কিছু লোকজনের নাম ঢোকাবেন। কিন্তু মাহবুব কবির তাদের কথা না রেখে, দুর্নীতির সুযোগ না দিয়ে পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফল প্রকাশ করে দেন। এতে চটেছেন সেই ‘বস’।
ফলে প্রশাসনিক বস আর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যৌথ চেষ্টায় চেয়ার হারালেন মাহবুব কবির। এই আদেশের মাধ্যমে একজন সৎ, সাহসী ও নিবেদিত মানুষকে অপমানিত করা হলো। ১৬ কোটি ভোক্তার চেয়ে নিষিদ্ধ পণ্য আমাদনীকারকদের প্রাধান্য দেয়া হলো। মানুষকে বিষ খাওয়ানোর বৈধতা দেয়া হলো। অন্যায়ের কাছে ন্যায়ের পরাজয় হলো। মাফিয়াদের কাছে রাষ্ট্রের পরাজয় হলো।
সাধারণ ভোক্তা হিসেবে, দেশের নাগিরক হিসেবে আমরা এটি মেনে নিতে পারি না। আমরা আগে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা চাই। এখানে মাফিয়াদের হস্তক্ষেপ রোধ চাই। মাহবুব কবির মিলনকে স্বপদে বহাল চাই। এজন্য প্রতিবাদ করতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রতিবাদ করুন, এটা আপনার-আমার দায়িত্ব!
https://m.facebook.com/Palash.Mahmud.88/photos/a.107879980732474/138536177666854/?type=3
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here