প্রসঙ্গ : শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ও জন্মাষ্টমী

তিসা শীল

একজন সনাতনী ধর্মাবলম্বী হিসেবে আপনি আমি প্রতিবছরই পালন করে থাকি জন্মাষ্টমী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিকে বলা হয় জন্মাষ্টমী। দ্বাপর যুগে অত্যাচারী রাজা, অসুর প্রভৃতি সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার ফলে এবং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের চরম পরিণতি দান করার উদ্দেশ্যে ধরাধামে অবতীর্ণ হন ভগবান বিষ্ণুর পূর্ণাবতার শ্রীকৃষ্ণ। দেবকীর ঘরে জন্ম নিয়ে তিনি পালিত হয়েছিলেন নিজ পিতা বসুদেবের ভ্রাতা নন্দের আলয়ে।

পালিকা মাতা হিসেবে পেয়েছিলেন মা যশোদাকে। অসংখ্য অত্যাচারী রাজা ও অসুরকে বধ করে এবং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরিণতি দান করে তিনি পুনরায় শান্তি স্থাপন করেছিলেন সমগ্র আর্যাবর্তে। একশ পঁচিশ বছরের লীলাজীবনে তিনি আমাদেরকে দান করেছিলেন শ্রীমদভগবদগীতার মতো বিরল জ্ঞানমার্গ।

পৃথিবীকে পরিত্রাণ করেছিলেন বহু অত্যাচারীর হাত থেকে। জন্মাষ্টমীর এই মহালগ্নে আজ আমরা আলোচনা করতে চাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পার্থিব জীবনের কিছু চুম্বক অংশ।

বস্তুত এই আলোচনা থেকে আমরা জানার চেষ্টা করব, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসবকে জন্মদিন না বলে জন্মাষ্টমী কেন বলা হয়? কেন শ্রীকৃষ্ণের ছয় সহোদরকে বধ করেছিলেন কংস? জন্মাষ্টমীব্রত সঠিকভাবে পালন করার নিয়ম কী? জন্মাষ্টমীতে উপবাসের নিয়ম এবং মাহাত্ম্য কী? এছাড়াও সেইদিন কী কী উপাচারে শ্রীকৃষ্ণের ভোগ নিবেদন করতে হয় সেই বিষয়ে। আশা করি, ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে যারা ভালোবাসেন তারা এই ব্রত জানতে ইচ্ছুক।

ভক্তরা জন্মাষ্টমীর উপবাস রাখেন ও সংকল্প করেন। উপবাসের সময় কোনো দানা খাওয়ার নিয়ম নেই। বৈষ্ণবমতে সম্পূর্ণ নির্জলা উপবাস করা হয়ে থাকে। এইদিন গোপালকে ৫৬ প্রকার ভোগ দেবার নিয়ম। পাকা তাল শ্রীকৃষ্ণের অধিক প্রিয়। জন্মাষ্টমীতে অন্নভোগ নিষিদ্ধ। ভাদ্র মাসে কৃষ্ণাষ্টমী উপবাসযোগ্য। জন্মাষ্টমীর দিন ভক্তরা রাত ১২টার আগে শুধুমাত্র একপদ দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ভক্তরা জন্মাষ্টমীর দিন উপবাস সংকল্প করেন। উপবাস থেকে হরিনাম জপ, কৃষ্ণলীলা স্মরণ, ভগবানকে দর্শন, ভক্তসঙ্গে হরিনাম সংকীর্তন করতে হবে এবং ভগবানকে অভিষেক করে একাদশীর দিনের মতো অনুকল্প প্রসাদ সেবন করতে হবে।

জন্মাষ্টমী উপবাসে যারা থাকেন তাদের ঈশ্বর সর্বদাই রক্ষা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here