নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচন ৭ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জটিল হয়ে ওঠেছে ভোটের সমীকরণ। এ আসনে ভোটার রয়েছেন ৪লক্ষ ৭৫হাজার ৯৯৬ জন। এর মধ্যে নগর অংশে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫টি (৩-৭) ওয়ার্ডে ভোটার রয়েছেন ৩ লক্ষ ১১হাজার ৮৬৫ জন ও শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন ব্যতীত বোয়ালখালী উপজেলায় ভোটার রয়েছেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৩১জন।

ঘোষিত তপশীল অনুযায়ী আগামী ১৩ জানুয়ারি সকাল ৯ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৭০টি ভোট কেন্দ্রে ইল্কেট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নগর অংশে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১০১টি।

গত ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দিন খান বাদল। এ নিয়ে তিনি এ আসনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ৭ নভেম্ব^র ভারতের ব্যাঙ্গালুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে এ আসন শূণ্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তাঁর মৃত্যুর পরপরই এলাকার নতুন সংসদ সদস্য কে হবেন তা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা শুরু হয়। শোকের মাঝেও ছিলো বাদলের আসনের উত্তসূরী কে হচ্ছেন তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা। শেষতক ১ ডিসেম্বর এ আসনে উপ-নির্বাচনের সময় বেঁধে দিয়ে তপশীল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এ নির্বাচনে ৮ প্রার্থী অংশ নিলেও গত ১৫ ডিসেম্বর দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন ঋণ খেলাপির অভিযোগে বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন। ওইদিন ৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন গণফ্রণ্টের উত্তম চৌধুরী ও জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রার্থী জিয়া উদ্দিন বাবলু। মনোনয়ন ফিরে পেতে আপিল ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন জাপার প্রার্থী বাবলু। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের ট্রাইব্যুনালে শুনানী শেষে জিয়া উদ্দিন বাবলুর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন।

এ নিয়ে নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, জাতীয় পার্টির জিয়া উদ্দিন বাবলু, বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট ফ্রণ্টের আবুল কালাম আজাদ, ইসলামিক ফ্রণ্টের ফরিদ উদ্দিন, ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী এমদাদুল হক।

এ আসনের বিগত নির্বাচন গুলোর আলোকে এলাকাবাসী জানান, এ আসনে প্রার্থীর জয় পরাজয় অনেকটা নগর অংশের ভোটের ওপর নির্ভর করে। সেই কারণে জিয়া উদ্দিন বাবলু নির্বাচনি মাঠে ফিরে আসায় নগরের ভোটের হিসেব-নিকেশে জটিল সমীকরণের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে বিষয়টিকে জটিল বলে মনে করছেন না উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এসএম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম- ৮ আসনের উন্নয়নের স্বার্থে আওয়ামী লীগ অনেক বিবেচনা করে প্রবীণ রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিনকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি এ এলাকারই সন্তান হওয়ায় এলাকার উন্নয়ন, সমস্যা ও সম্ভাবনার প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা থাকবে বেশি। নির্বাচনে প্রার্থীতা অনেকেই করবেন এটাই স্বাভাবিক, ভোটারদের চিন্তা চেতনায় আসল। আশা করি মোছলেম উদ্দিন নির্বাচিত হলে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দৌঁড়ঝাঁপ করে এলাকার উন্নয়ন কাজগুলো আদায় করে বাস্তবায়ন করতে পারবেন।’

নৌকার মনোনীত প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচিত হলে কালুরঘাটে সড়ক সেতু দৃশ্যমান করাসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করবো। এলাকার প্রত্যেক নাগরিক যেকোনো সময়, যেকোনো প্রান্ত থেকে সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। এলাকাবাসীকে সাথে নিয়েই এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো।’

তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলাম, মৃত্যু সে সময়ও হতে পারতো। আমার সমবয়সী অনেকেই পরপারে চলে গিয়েছেন। আমিও কোনো এক সময় চলে যাবো। তাই জীবনের শেষ সময়গুলো যাতে নিজ এলাকার জন্য কাজ করার সুযোগ পাই। আশা রাখি ভোটাররা সেই সুযোগ দেবেন নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here