চট্টগ্রাম রেঞ্জের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় রেঞ্জের ১৭ ক্যাটাগরিতে ২৯ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ পুরস্কার তুলে দিয়েছেন রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।
বুধবার সকাল ১১টায় হালিশহরের জেলা পুলিশ লাইন্সের সিভিক সেন্টারে আয়োজিত সভায় এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের শ্রেষ্ঠত্বের এ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রেঞ্জ ডিআইজি।
জঙ্গিবাদ অস্ত্র ও মাদক নির্মূল, ওয়ারেন্ট তামিল, মামলা দ্রুত নিস্পত্তি ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের সকল পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার, অফিসার ইনচার্জ এবং কমান্ড্যান্ট, আর.আর.এফ, চট্টগ্রামসহ পুলিশের অন্যান্য সকল ইউনিট ইনচার্জদের নিয়ে মত বিনিময় সভায় মিলিত হন চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অপরাধ সূচক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে সংঘটিত অপরাধের মাত্রা তুলনামূলকভাবে পর্যালোচনা করা হয়।
এতে সেপ্টেম্বর’ মাসের চেয়ে অক্টোবর’ মাসে রেঞ্জের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, অপরাধজনক বল প্রয়োগ, নারী নির্যাতন, চুরিসহ সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ সংঘটনের মাত্রা বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করা যায়।
রেঞ্জ ডিআইজি, এ ধরণের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার’দের নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন, সিঁধেল চুরি এবং গরু চুরির প্রবণতা তুলনামূলকভাবে হ্রাস পাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ ধরণের অপরাধ আরো কমিয়ে আনার পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করেন।
এছাড়া অব্যাহত পুলিশি অভিযানের মুখে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক চোরাকারবারীদের দৌরাত্ব্য অক্টোবর মাসে তুলনামূলকভাবে কমে আসায় সকল’কে ধন্যবাদ জানিয়ে অস্ত্র ও মাদক বিরোধী অভিযান আরো জোরদার করার নির্দেশ প্রদান করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।
চট্টগ্রাম রেঞ্জে পুরস্কৃত হলেন যারা : চট্টগ্রাম রেঞ্জে যারা যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তাদের মধ্যে অপরাধ নিয়ন্ত্রন দক্ষতা, অফিসার-ফোর্স পরিচালনা, গুরুত্বর্পূণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, নিয়মিত মামলার আসামি গ্রেফতার, পরোয়ানা তামিলসহ সার্বিক কর্ম মূল্যায়ণে রেঞ্জের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হন।
শ্রেষ্ঠ থানা নির্বাচিত হয়েছে সুধারাম মডেল থানা, শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার হিসেবে নোয়াখালী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. আবদুর রহিম।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার মো. শাহাবুর আলম শ্রেষ্ঠ এস আই, নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানার সাইফুল ইসলাম ও কুমিল্লা চান্দিনা থানার ঈসমাইল হোসেনকে শ্রেষ্ঠ এএসআই নির্বাচিত করা হয়।
এছাড়া শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন চট্টগ্রামের রাউজান থানার এস আই (নিঃ) আরাফাত বিন ইউসুফ ও নোয়াখালীর সোনাইমুরি থানার এ এস আই (নিঃ) আল আমিন।
শ্রেষ্ঠ মাদকদ্রব্য উদ্ধারকারী অফিসারের পুরস্কার গ্রহণ করেন খাগড়াছড়ি নাইক্ষ্যাংছড়ি থানার এসআই (নিঃ) এনামুল হক ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিঃ) মো. সাইদুর রহমান।
অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারকারী অফিসার হিসেবে বান্দরবান আলীকদম থানার এসআই (নিঃ) আমিনুল ইসলাম, কক্সবাজার টেকনাফ মডেল থানার এসআই (নিঃ) সাব্বির আহম্মেদ ও লক্ষীপুর চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই(নিঃ) মো. মজিবুর রহমান পুরস্কার গ্রহণ করেন।
এছাড়া নোয়াখালী জেলা বিশেষ শাখার এ এসআই (নিঃ) মো. সাদ্দাম হোসেনকে শ্রেষ্ঠ ডিএসবি ওয়াচার, নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিঃ) মো. জাকির হোসেন ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিঃ) মো. কামাল হোসেনকে শ্রেষ্ঠ ডিবি অফিসার নির্বাচিত করা হয়।
কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলাকে শ্রেষ্ঠ ডিবি ইউনিট, কুমিল্লা ও ফেনী ট্রাফিক ইউনিটকে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইউনিট নির্বাচন করা হয়।
এছাড়া কুমিল্লা কোর্ট পরিদর্শক সালাউদ্দিন আল মাহমুদকে শ্রেষ্ঠ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার এসআই (নিঃ) মো. গোলাম মোস্তফা, নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই(নিঃ) মো. সাঈদ মিয়া, একই জেলার হাতিয়া থানার এসআই (নিঃ) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিঃ) মো. সহিদার রহমান ও এসআই(নিঃ) নন্দন চন্দ্র সরকারকে শ্রেষ্ঠ মামলা তদন্তকারী অফিসার হিসেবে পুরস্কৃত করা হয় এছাড়া সেপ্টেম্বর মাসের শ্রেষ্ঠ তদন্তকারী অফিসার হিসেবে বান্দরবান লামা থানার এসআই(নিঃ) আয়াত উল্ল্যাহ পুরস্কৃত হয়।
শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশীং অফিসার হিসেবে কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই(নিঃ) খালেকুজ্জামান, শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশীং মনোনীত সদস্য নির্বাচিত হন লক্ষীপুর সদর মডেল থানার কমিউনিটি পুলিশ সেলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এহতেশাম হায়দার বাপ্পী।
রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনাকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক ও সার্টিফিকেট অফ এপ্রিসিয়েশন প্রদান করেন এবং সাফল্যের এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন।
তিনি উপস্থিত সকল অফিসার-ফোর্স’কে জনবান্ধব পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার এবং জঙ্গিবাদ নির্মূলে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।