বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনায় সারা দেশের মানুষ এখন অনেকটা গৃহবন্দী। সরকারি ও বেসরকারি অফিস আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সকল গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে দেশের বিত্তশালী পরিবার মোটামুটি চিন্তামুক্ত থাকলেও পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো নেই হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা। বিশেষ করে দিনমজুর, রিকশাওয়ালাসহ খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বিপদে।
এই বিপদে হতদরিদ্র পরিবারকে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম নগর এবং জেলার ১৫টি পৌরসভা ও ১৫টি উপজেলার ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৬৯ পরিবারকে মোট ১৫০ মেট্রিক টন চাল, ১২শ শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং ৫২ হাজার ৪টি পরিবারকে মোট ৫০ লাখ ৬০ হাজার নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, করোনা সংকটের এই দুঃসময়ে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচ দফায় দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে নগরের ৪৮ হাজার পরিবারকে ২২০ মেট্রিক টন চাল ও ১৬ হাজার ৫০০ পরিবারকে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়াও ৩৩৩-তে কল পেয়ে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নগরের সাড়ে ৩ হাজার মধ্যবিত্ত পরিবারের বাসায় শুকনো খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের ১৫টি পৌরসভার হতদরিদ্র ১০ হাজার পরিবারকে ১০০ মেট্রিক টন চাল, আড়াই হাজার পরিবারকে নগদ ৫ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নগরে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ২২০০ পরিবারকে ১০ মেট্রিক টন চাল ও ১২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো জেলার ১৫টি উপজেলায় বণ্টন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
আপনারা সবাই ঘরে থাকুন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৫টি উপজেলার মধ্যে মিরসরাই উপজেলায় ৫৪০০ পরিবারকে ৫৪ মে.টন চাল ও ৩৩০০ পরিবারকে নগদ ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৪৯০০ পরিবারকে ৪৯ মে.টন চাল ও ২৯৭৫ পরিবারকে নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ফটিকছড়ি উপজেলায় ৭২৫০ পরিবারকে সাড়ে ৭২ মে.টন চাল ও ৪৩১৩ পরিবারকে নগদ ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫শ টাকা, রাউজান উপজেলায় ৩৬৫০ পরিবারকে সাড়ে ৩৬ মে.টন চাল ও ২২১৩ পরিবারকে নগদ ২ লাখ ৮০ হাজার ৫শ টাকা, হাটহাজারী উপজেলায় ৩৪০০ পরিবারকে ৩৪ মে.টন চাল ও ২ হাজার পরিবারকে নগদ ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, বোয়ালখালী উপজেলায় ২৭০০ পরিবারকে ২৭ মে.টন চাল ও ১৫৬৩ পরিবারকে নগদ ১ লাখ ২৮ হাজার ৫শ টাকা, পটিয়া উপজেলায় ৩৯০০ পরিবারকে ৩৯ মে.টন চাল ও ২৩২৫ পরিবারকে নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, আনোয়ারা উপজেলায় ৩৪০০ পরিবারকে ৩৪ মে.টন চাল ও ২ হাজার পরিবারকে নগদ ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, চন্দনাইশ উপজেলায় ৩১০০ পরিবারকে ৩১ মে.টন চাল ও ১৭৮৮ পরিবারকে নগদ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫শ টাকা, লোহাগাড়া উপজেলায় ৪২৫০ পরিবারকে সাড়ে ৪২ মে.টন চাল ও ২৫৩৮ পরিবারকে নগদ ২ লাখ ৬ হাজার ৫শ টাকা, সাতকানিয়া উপজেলায় ৪৪০০ পরিবারকে ৪৪ মে.টন চাল ও ১৬৫০ পরিবারকে নগদ ২ লাখ ২১ হাজার টাকা, বাঁশখালী উপজেলায় ৬০৫০ পরিবারকে সাড়ে ৬০ মে.টন চাল ও ৩৬৩৮ পরিবারকে নগদ ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫শ টাকা, সন্দ্বীপ উপজেলায় ৬৪৫০ পরিবারকে সাড়ে ৬৪ মে.টন চাল ও ৩৮৬৩ পরিবারকে নগদ ৩ লাখ ২২ হাজার ৫শ টাকা এবং কর্ণফুলী উপজেলায় ১৭শ পরিবারকে ১৭ মে.টন চাল ও ৯২৫ পরিবারকে নগদ ৯০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।