আকতার হোসাইন

চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুখের খবর হলো, সরকারি সংস্থার বাইরে দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কোভিড ১৯ পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে। এর একটি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চালু করেছিল। তবে, সকাল ৮ থেকে টেলিফোন করে সিরিয়াল পেতে হলে অনেক ধৈর্যের দরকার। যারা পান, তারা ভাগ্যবান।৷ চট্টগ্রামের নামকরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ‘শেভরন’ সম্প্রতি জিইসি কনভেনশন সেন্টারে এই পরীক্ষা চালু করেছে। অনলাইনে ফরম পূরণের পর তাদের দেয়া টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করে id নম্বর নিয়ে বিকাশ করে টাকা পাঠালে তারপর তারা দিনক্ষণ জানিয়ে দেন। সেদিন আমরা চারজন সেই নিয়ম অনুসরণ করে নমুনা দিতে গেলাম৷ দেখা গেল, তারা বেশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নমুনা সংগ্রহ করছেন। তবে, অভিজ্ঞতার ঘাটতিটা বেশ চোখে পড়ার মত। এছাড়া ব্যবহারেও নম্রতার অভাব। হয়তো নিয়ম না জানা ও না মানা বাঙালিকে লাইনে রাখতে হলে এরকম ব্যবহারের প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করে৷ ( যেমন, বেশ শিক্ষিত হোটেল মালিককেও দেখেছি, বয় বাবুর্চিদের চোদানির পোয়া ছাড়া কথা না বলতে, নইলে এরা নাকি সোজা থাকে না)। যাহোক, দুইদিন পরে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে আজ ৫ টায় রিপোর্ট আনতে যেতে বললেন। রিপোর্ট আনতে গিয়ে দেখা গেল, হযবরল অবস্থা। চরম বিশৃঙ্খলা। অনেকের রিপোর্ট আসে নি। এক ঘন্টা দীর্ঘ লাইনে থেকে রিপোর্ট যা’ও পাওয়া গেল, তাতে আমরা চারজনের মধ্যে তিনজনের রিপোর্ট আসছে, সবচেয়ে আগে যার নমুনা নেয়া হয়েছে, তার রিপোর্ট আসে নি। দরকার ছিল তারটাই বেশি। কারণ, গত ৩১ মে থেকে তিনি সাসপেক্টেড কোভিড রোগী। ৮ দিন পর তার অবস্থা গুরুতর হলো, কোনও হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে বাসাতেই যাবতীয় চিকিৎসা শুরু হলো। আল্লাহর রহমতে তিনি এখন প্রায় সুস্থ। এর আগে এক লোকের মাধ্যমে ফৌজদারহাটের আইসিডিআরবিতে ১০জনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল। যে লোক নমুনা নিয়ে গেছে, সে আর যোগাযোগ করে না। সে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের টেকনিশিয়ান। হয়তো সে ওখানে একটা লাইন পেয়েছিল। ১০ জনের জন্য ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। তবে, সে জালিয়াতি করে নি। জমা ঠিকই দিয়েছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে রিপোর্ট জোগাড় করেছি, দেখা গেল ১০ জনেরই নেগেটিভ। সে লিখিত রিপোর্ট এনে দেয়ার কথা, এখন টেলিফোন বন্ধ।
শেভরন শুরু করলেও তারা যেহেতু এক্ষেত্রে একেবারে নবীন ও অনভিজ্ঞ, প্রথমদিকে শৃঙ্খলার কিছুটা অভাব দেখা দিতেই পারে। আশাকরি, দ্রুত তারা তা’ কাটিয়ে উঠতে পারবে। তারা একটা কাজ করতে পারে, প্রথমে মোবাইলে sms এর মাধ্যমে রিপোর্ট জানিয়ে দিতে পারে৷ পরে একটা সময় দিতে পারে লিখিত রিপোর্ট নিয়ে যাবার জন্য। এতে অনেকে স্বস্তি যেমন পাবেন, ওদের ওপর রিপোর্ট ডেলিভারিতে চাপও কমে যাবে। অনেকেই মোবাইল sms পেলে হয়তো প্রয়োজন না হলে কষ্ট করে আর তাড়াহুড়ো করে রিপোর্ট আনতে যাবে না। জিইসি কনভেনশন সেন্টারের মত একটা বড়ো হলঘর এই পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়ে তারা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।
টাকা খরচ হলেও আশাকরি, শেভরন এক্ষেত্রে তাদের সুনাম ধরে রাখতে পারবে।

লেখক – কবি ও সাহিত‌্যিক

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here