অনলাইন ডেক্স : এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে রোববার (১২ মে)।
ওইদিন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বেলা ১২টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে অনলাইনে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা অনলাইন এবং এসএমএসে আবেদন করতে পারবেন।
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, ১২ মে থেকে অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। আর জুন মাসের মধ্যে ভর্তির কাজ শেষ করে আগামী ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, আটটি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উত্তীর্ণরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবেন। আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে এবার পাসের বছরের পরিবর্তে বয়স নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ২২ বছর।
এবছরও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।
অনলাইনের (www.xiclassadmission.gov.bd) পাশাপাশি টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করে ভর্তির আবেদন করা যাবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, আগামী ১২ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। যারা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন তাদেরকেও একই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
আর ২৪ থেকে ২৬ মে’র মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে তারা ৩ থেকে ৪ জুন পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
১০ জুন প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। প্রথম তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৮ জুন যে কলেজের তালিকায় নাম আসবে ওই কলেজেই যে শিক্ষার্থী ভর্তি হবেন তা এসএমএসে নিশ্চিত করতে হবে।
২১ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে এবং ২৫ জুন তৃতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা ২২-২৩ জুন সিলেকশন নিশ্চয়ন এবং তৃতীয় পর্যায়ে তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ২৬ জুন সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। ২৭ থেকে ৩০ জুন শিক্ষার্থী ভর্তি শেষে আগামী ১ জুলাই ক্লাস শুরু হবে।
এবছরও অনলাইনে ১৫০ টাকা ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করা যাবে। প্রতি কলেজের জন্য ১২০ টাকা ফি দিয়ে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীর করা আবেদনের ভিত্তিতে মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৩ শতাংশ বিভাগীয় ও জেলা সদরের বাইরের শিক্ষার্থী, ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্দের সদস্যদের সন্তান, ০.৫০ শতাংশ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য এবং ০.৫০ শতাংশ প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
ভর্তি ফি
মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি ভর্তি ফি নেওয়া যাবে না। ঢাকা মহানগর এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না।
ঢাকা মহানগর এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিও বর্হিভূত শিক্ষকদের বেতনভাতা দেওয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে নয় হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নেওয়া যাবে।
আর উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না।
সরকারি কলেজগুলো পরিপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ফি সংগ্রহ করবে। আর দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলা হয়েছে।
ভর্তি প্রক্রিয়ার আগেই বেসরকারি কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি ফিসহ মাসিক বেতন ও অন্যান্য যাবতীয় খরচ লিস্ট নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে এবং ওয়েবসাইটে দিতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীর কাছে অনুমোদিত ফি এর অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া যাবে না এবং অনুমোদিত সব ফি যথাযথ রশিদ দেওয়ার মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে নীতিমালার কোনোরূপ ব্যত্যয় হলে বেসরকারি কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি বা স্বীকৃতি বাতিলসহ এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে। সরকারি কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হব।
এবি/সবুজ