আসন্ন চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের আগাম ‘ঘোষণার’ একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর সাতকানিয়া-লোহাগাড়া থেকে নির্বাচিত সাংসদ আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে ইসিতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন ওই আসনের বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান।
পাশাপাশি তিনি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন।
সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ২৫ ডিসেম্বর দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান প্রচারণা শুরুর দুদিনের মাথায় গত বুধবার মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খানের কাছে এবং গতকাল বৃহস্পতিবার সাংসদ নদভীর বিরুদ্ধে রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান আজাদীকে জানান, মেয়র এবং এমপি পদে থেকে নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করার বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছি এবং প্রতিকার প্রার্থনা করেছি। আমি চাই, একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হোক। আমরা সবাই যেন আইন মেনে চলি এবং জনগণকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিই। এজন্য যেসব জায়গায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, সেগুলো কমিশনকে জানাচ্ছি। আশা করি নির্বাচন কমিশন বিষয়গুলো দেখবেন। আমি আশা করি সবাই আচরণবিধি মেনে চলবেন।
আবু সুফিয়ান তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, সিটি মেয়র গত ২২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় এলাকার চান্দগাঁও আবাসিকে এ-ব্লকের ১ নম্বর সড়কে নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিবাচনী আচরণ বিধিমালা-২০০৮ ভঙ্গ করেছেন।
সুফিয়ান আরো উল্লেখ করেন, মেয়রের হিসেবে এ ধরনের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। এটা কোনোভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবাচনের জন্য সহায়ক নয়।
এদিকে গত ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের বাসভবনে বর্ধিত সভায় সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বিগত মেয়র নির্বাচনে নিজেই চান্দগাঁওয়ে ৭টি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করেছেন উল্লেখ করে আসন্ন ১৩ জানুয়ারির উপনির্বাচনেও সেভাবে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে ঘোষণা দেন।
এদিকে বিডিনিউজের খবরে বলা হয়, এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নেজামুদ্দিন নদভী। তিনি বলেন, ‘এসব ভুয়া কথা। এরকম কোনো বক্তব্যই আমি দিইনি। আমি মামলা করব। ৬০টি (বক্তব্যে সাতটি বলেছেন) কেন্দ্র কী আমি একা দখল করতে পারব? করলে প্রার্থী আর অন্যরা কী করবে? সিটি নির্বাচনে আমাকে ছয়টি কেন্দ্রের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। আমি দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। দখল বা নিয়ন্ত্রণের কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি উপরের সাথে কথা বলেছি। তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করব।’
তাছাড়া মোছলেম উদ্দিনের বাসার সভাটি নির্বাচনী প্রচারণা নয়, মতবিনিময় সভা ছিল দাবি করে তিনি বলেন, ‘মতবিনিময় সভায় গেলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় না।’