মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘুদের নিয়ে করা অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে বাংলাদেশি নারী প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ শনিবার (২০ জুলাই) সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর ধানমন্ডিতে তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি যা বলেছেন সম্পূর্ণ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তিনি যা বলেছেন এ বিষয়ে তথ্য প্রমাণ যদি না পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রিয়া সাহা আমাদের কাছে না এসে সুদূর আমেরিকায় নালিশ করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় এটি উদ্দশ্যমূলক।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় সংক্রান্ত যে নালিশ করা হয়েছে সে বিষয়টি চক্রান্ত ও উদ্দেশ্যমূলক। সে রকম ঘটনা ঘটলে আপানারা (মিডিয়ার লোকজন) বসে থাকতেন না। ফলাও করে প্রচার হতো। তবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এমনটি হয়েছিল। আর বর্তমান সরকারের সময় তেমনটি যেন না হয় সেজন্য শক্ত হাতে দমন করা হচ্ছে।’
তা হলে প্রিয়া সাহা কেন এমন অভিযোগ করলেন? এমন প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখব। সে দেশ থেকে আমাদের লিখিতভাবে কিছু জানানো হলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রিয়া সাহা এমন কিছু হয়ে থাকলে আমাদেরও বলতে পারতেন। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তাও আমরা দেখব। কেননা এ দেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে বাস করছেন। এ দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬ দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি।’
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, তাদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তা একান্তই তার নিজস্ব বক্তব্য, সংগঠনের নয়। প্রিয়া সাহার এ বক্তব্য নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।