ক্রিড়া ডেক্স: নিয়মরক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৯৩ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়েছে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। এ রিপোর্ট লেখা অবধি, টাইগাররা ৮ ওভারে বিনা উইকেটে তুলেছে ৪২ রান। ব্যাটিংয়ে আছেন ওপেনার তামিম ইকবাল (২২) এবং লিটন দাস (১৮)। এই ম্যাচ হাতে রেখে আগেই সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।

টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আয়ারল্যান্ডের দলপতি উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। বুধবার (১৫ মে) ডাবলিনে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে চারটায় শুরু হয় ম্যাচটি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে আইরিশরা তোলে ২৯২ রান। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ওপেনার পল স্টার্লিং। আবু জায়েদ রাহি নিয়েছেন ৫ উইকেট।

বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি বাদ দিলে এটা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের শেষ দুই ম্যাচের একটি। নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার আর পরখ করে নেওয়ার আরেকটি সুযোগ পায় টাইগাররা। ফাইনাল ম্যাচটি জিতলে সুযোগ থাকছে প্রথম কোনো ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জেতার। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে একাদশে ফিরেছেন লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, সাইফউদ্দিন এবং রুবেল হোসেন। আগের ম্যাচে থাকলেও এই ম্যাচের একাদশে নেই মেহেদি হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, মোস্তাফিজুর রহমান এবং মোহাম্মদ মিঠুন।

ম্যাচের চতুর্থ ওভারে রুবেল ফিরিয়ে দেন ওপেনার জেমস ম্যাককোলামকে (৫)। স্লিপে দাঁড়ানো লিটনের হাতে ধরা পড়েন আইরিশ ওপেনার। দলীয় ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ইনিংসের ১১তম ওভারে নিজের প্রথম এবং অভিষেক উইকেট পান আবু জায়েদ রাহি। উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে বিদায় নেন অ্যান্ডি বালবির্নি (২০)। দলীয় ৫৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ব্যক্তিগত ৫৯ রানের মাথায় মোসাদ্দেকের বলে তুলে মারতে গেলে সাব্বিরের হাতে ধরা পড়তে পড়তেই জীবন পান পল স্টার্লিং। পরের ওভারে সাকিবের প্রথম বলেই স্টার্লিংয়ের সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

ইনিংসের ২৯তম ওভারে প্রথমবার বোলিং আক্রমণে আসেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে নেন ওপেনার পল স্টার্লিং। ১২তম সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে চলা দলপতি উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে ফিরিয়ে দেন রাহি। ইনিংসের ৪৫তম ওভারে বিদায়ের আগে আইরিশ দলপতি ১০৬ বলে ৭টি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ৯৪ রান। তার আগে স্টার্লিংয়ের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১৭৪ রান।

৪৭তম ওভারে আবারো আঘাত হানেন রাহি। ফিরিয়ে দেন কেভিন ওব্রায়েনকে। তামিমের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ৩ রান। একই ওভারে সেঞ্চুরিয়ান স্টার্লিংকে লিটন দাসের হাতে ধরা দিতে বাধ্য করেন রাহি। স্টার্লিং বিদায়ের আগে ১৪১ বলে ৮টি চার আর চারটি ছক্কায় তিনি করেন ১৩০ রান। দলীয় ২৬৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় আইরিশরা। ৪৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে রাহি ফিরিয়ে দেন ১২ রান গ্যারি উইলসনকে। এই উইকেটের মধ্যদিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন ৯ ওভারে ৫৮ রান খরচ করা রাহি। সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারে ১১ রান করা মার্ক অ্যাডাইর হিট আউট হন। ৪ রান করা জর্জ ডকরেলকে শেষ বলে বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন।

সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে দুটি, রুবেল হোসেন ৭ ওভারে ৪১ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। মাশরাফি ৮ ওভারে ৪৭, সাকিব ৯ ওভারে ৬৫, মোসাদ্দেক হোসেন ৮ ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।

এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুটা দারুণ করেছিল মাশরাফির দল। ক্যারিবীয়ানদের ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দেয় টাইগাররা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল আইরিশরা। বৃষ্টি আর খারাপ আবহাওয়ার কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। আর নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আবারো ক্যারিবীয়ানদের সহজেই হারিয়ে দেয় টাইগাররা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ৫ উইকেটের জয় পায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি দুই দেখাতেই জয় তুলে নেয়। প্রথম ম্যাচে বোনাস সহ পায় ৫ পয়েন্ট। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হারলেও নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আবারো আইরিশদের হারালে উইন্ডিজদের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৯।

এদিকে, বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়ানদের হারিয়ে পায় ৪ পয়েন্ট। আইরিশদের বিপক্ষে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে ২ পয়েন্ট নিয়ে টাইগারদের পয়েন্ট হয় ৬। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আরেকবার ক্যারিবীয়ানদের হারালে টাইগারদের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১০। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থেকে ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। দুইয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজও ফাইনাল নিশ্চিত করে। আগামী ১৭ মে বাংলাদেশ-উইন্ডিজ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।

আয়ারল্যান্ড একাদশ: পল স্টার্লিং, জেমস ম্যাককোলাম, অ্যান্ডি বালবির্নি, উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড, কেভিন ওব্রায়েন, মার্ক অ্যাডাইর, গ্যারি উইলসন, জর্জ ডকরেল, বয়েড রানকিন, ব্যারি ম্যাককার্থি, জশ লিটল।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি, সাব্বির রহমান, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here