ডেবোরা আলমা একজন কবি। যুক্তরাজ্যের শর্পশায়ারের বিশপস ক্যাসেলে তিনি গড়ে তুলেছেন কবিতা ফার্মেসি। বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের রোগ সারাতে তিনি ওষুধের বদলে কবিতা দিয়ে দিচ্ছেন। কবিতা ফার্মেসিতে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আধুনিক জীবনের কারণে হতাশা ও দুর্দশায় জর্জরিত।

ডেবোরা আলমা থরেথরে কবিতার বই সাজিয়ে রেখেছেন তার ফার্মেসিতে। মনের অবস্থার ওপর নির্ভর করে কবিতাগুলোর ক্যাটেগরি করা হয়েছে। কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন হৃদয়ের ভগ্নদশা কাটিয়ে উঠতে কবিতার কোনো বিকল্প নেই।

শুধু তাই নয় তিনি তার রোগীদের জন্য ওয়ার্কশপ আর কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রেখেছেন। তার রোগীদের একান্তে ডেকে তিনি কিছু প্রশ্ন করেন। তারপর ভেবেচিন্তে তার জন্য কিছু কবিতা বাছাই করে পড়তে পরামর্শ দেন।

একজন মানুষের সাথে মাত্র কিছুক্ষণ কথা বলেই তার জন্য পছন্দমাফিক এবং উপকারী কবিতাটি বাছাই করা সহজ কাজ নয়। সেই কঠিন কাজটিই করছেন আলমা। তিন রোগীদের কবিতা বাছাই করে দেওয়ার সময় খেয়াল রাখেন যেনো কবিতাটি তার জন্য অবশ্য পাঠ্য হয়ে ওঠে। এবং অধিকাংশ সময়েই তার কোনো বিকল্প থাকে না।

আলমা কয়েক বছর ধরে ডিমোনেশিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে কাজ করার সময় দেখেছিলেন কিভাবে কবিতা একজনের মনোজগৎকে পাল্টে দিতে পারে। তিনি দেখেছেন রোগীদের সাধারণত কথা শোনার কেউ থাকে না। তাই তিনি রোগীদের কথা মনযোগ সহকারে শোনেন এবং তাদের কথা থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নোট রাখেন।

শুধু যে তিনি ফার্মেসিতে রোগীদের কবিতা চিকিৎসা করেন তা নয়। কবিতা ফার্মেসির রয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। সেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি যেসব রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদের কাছে গিয়ে তিনি কবিতা পড়ে শোনান।

আলমা বিশ্বাস করেন শিল্পকর্মের সাথে মানসিকতার একটি গভীর যোগাযোগ রয়েছে। তাই যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন যদি তার মনের সাথে কবিতা, প্রার্থনা বা কোনো কোর্সের মাধ্যমে কথা বলা যায় তবে তার সেরে ওঠা সুনিশ্চিত।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here