নিজস্ব প্রতিবেদক :
বোয়ালখালীতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি জবর দখলে নিতে ঘেরাবেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে থানা পুলিশ। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে কয়েকজন ব্যক্তি সরকার দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ সাংবাদিকদের গণধোলাই দিয়ে মারার হুমকিও প্রদান করেন তারা।

শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সকালে উপজেলার পশ্চিম শাকপুরায় সম্পত্তি দখল বেদখল নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জায়গার মালিক মৃদুল চৌধুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা এলাকার বিজয় ধরের ওয়ারিশদের দখলীয় সম্পত্তি দখলে নিতে সরকার দলীয় লোকজনের নাম ভাঙিয়ে পার্শ্ববর্তী ওঁকার চৌধুরী (৫৭), জনার্দ্দন চৌধুরী (৫৫) ও অরিন্দম চৌধুরীর (৫৩) দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। শুক্রবার সকালে লোকজন নিয়ে ওই সম্পত্তিতে পিলার দিয়ে কাঁটা তারের ঘেরাবেড়া দিতে গেলে তাতে বাধা দেন বিজয় ধরের ওয়ারিশ মৃদুল চৌধুরী। তাদের বাধা দেওয়ায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা মৃদুল চৌধুরীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে ঘেরাবেড়া অব্যাহত রাখে। এ ঘটনায় মৃদুল চৌধুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সরজমিনে দেখা যায়, ২০-২৫ লোকজন নিয়ে বিরোধীয় সম্পত্তিতে কাঁটাতারের ঘেরাবেড়া নির্মাণ করছে। এ সময় উপস্থিত অরিন্দম চৌধুরীসহ উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে ঘেরাবেড়া নির্মাণ করছেন। কয়েকজন ব্যক্তি তাদের সরকার দলীয় নেতা পরিচয় দেন। এসময় তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে গণধোলাই দিয়ে মারার হুমকি দেয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘কারো ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা দখল করার নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এরকম নির্দেশ দেওয়ার সুযোগই নেই।’

মৃদৃল চৌধুরী জানান, আমাদের ৮৬শতক সম্পত্তি দখলে নিতে দীর্ঘদিন ধরে অপচেষ্টা করে আসছে পার্শ্ববর্তী কয়েকজন ব্যক্তি। সম্প্রতি এ সম্পত্তি আমাদের নামে নামজারী করে সরকারি খাজনা পরিশোধ করলে তারা এ সম্পত্তি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। শুক্রবার জোরপূর্বক ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের সম্পত্তিতে ঘেরাবেড়া দিতে চেষ্টা চালায়। এতে বাধা দেওয়ায় তারা আর কোনদিন আমাকে জায়গায় দেখলে প্রাণ মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করেছে।

অভিযুক্ত জনার্দ্দন চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সবজি চাষাবাদ করেছি, তা সংরক্ষণের জন্য ঘেরাবেড়া দিয়েছি। সাংবাদিকদের গণধোলাই দিয়ে মারার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি বলা ভুল হয়েছে।

থানার উপ-পরিদর্শক মো.ছালামত উল্লাহ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিরোধীয় সম্পত্তিতে ঘেরাবেড়া নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার জন্য বিবাদীদের বলেছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের হুমকির বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ওসি।

এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হুমকীর ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা জরুরী বৈঠক আহবান করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here