সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, আমরা যখন পড়ালেখা করতাম, তখন বছরের তিন মাস পুরনো বই পড়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলতো। তিন মাস পর আমরা নতুন বই হাতে পেতাম। তাও দুই/তিনটা বই কম থাকতো। আর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বছরের প্রথম দিনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। সরকার বছরের প্রথম দিনে কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করবে। সেই তুলনায় উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়ার জনগণ থেকে বই বিতরণে বাংলাদেশ দ্বিগুন।

গতকাল রবিবার সীতাকুন্ড উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বই উৎসবের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, অনুমোদন ছাড়া কোথাও কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাবে না। এভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলে মূল প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই এসব কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সরকার অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সার্বিক সহযোগিতা দিতে হবে। তিনি বলেন, নতুন বইয়ের জন্য এখন অপেক্ষা করতে হয় না। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বছরের প্রথম দিনেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। এবার বৈশ্বিক নানা প্রতিবন্ধকতা সত্বেও আমরা যথাসময়ে বই তুলে দিয়েছি।
সীতাকুÐের বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সীতাকুন্ড উপজেলাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এখানে প্রচুর শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখে একথা ঠিক, কিন্তু কোন অবস্থাতেই নিয়ম ভঙ্গ করে কোন প্রতিষ্ঠান যেন গড়ে না উঠে। যেখানে সেখানে কল কারখানার বর্জ্য যেন না ফেলা হয়, যেন কোথাও পাহাড় কাটা না হয়, এসব কঠোরভাবে দেখতে হবে।
এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, সীতাকুন্ডের উন্নয়নে প্রেস ক্লাবকে সাথে নিয়ে কাজ করুন। সাংবাদিকদের সহযোগিতা থাকলে উন্নয়ন সব সময় সহজ হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সীতাকুন্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ এসএম আল মামুন, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভানেত্রী তানজিয়া রহমান, এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু রায়হান দোলন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম, সীতাকুন্ড প্রেস ক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তী, শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুচ্ছোফা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস. মোস্তফা আলম সরকার প্রমুখ। বই উৎসবের দিনে সীতাকুন্ড উপজেলায় মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা ও এবতেদায়ী প্রাথমিক ৪৭টি প্রতিষ্ঠানে ৫,৯৫,৫৫০টি বই ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলে ১৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪২,৯৩৬ জনকে বই বিতরণ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here