সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে করোনার কাছে হার মানলেন ‘গরিবের চিকিৎসক’ খ্যাত ডা. মো. মঈন উদ্দিন। ৯ দিন করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে বুধবার (১৫ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক।

মানবদরদি চিকিৎসক ডা. মঈন উদ্দিন সিলেটে করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলেন। তিনি সিলেটে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ টিমের সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুর খবর সিলেটে ছড়িয়ে পড়ার পর তার সহকর্মী, ছাত্রছাত্রীসহ সিলেটবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পরোপকারী এই চিকিৎসকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে অনেকে দোয়া চেয়েছেন। তার স্মৃতিচারণ করে অনেকেই লেখেন, তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের গরিবের চিকিৎসক। মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এ গুণী চিকিৎসকের মৃত্যুতে যেন কাঁদছে সিলেট।

২০১৪ সালে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের পর এখানেই তিনি গ্রামের খেটে খাওয়া গরিব-দুঃখী মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। তার সেবা নিয়ে খুশি ছিলেন রোগী ও স্বজনরাও।

ডা. মঈন উদ্দিনের কাছ থেকে চিকিৎসা নেয়া একজন নিম্নবিত্ত পরিবারের রোগী নগরের আখালিয়া এলাকার আরব আলী তার মৃত্যুর খবর শুনে এ প্রতিবেদককে ফোন করে বলেন, তিনি আমার চিকিৎসক ছিলেন। তাকে আমি দীর্ঘ দিন ধরে প্রাইভেটে দেখিয়ে আসছি। ১০০/২০০ যাই রোগী দেখার ফিস দিয়েছি হাসিমুখে নিয়েছেন। কোনোদিন মুখ কালো করেননি। এই সমাজে তার মতো একজন ভালো চিকিৎসক পাওয়া বিরল।

জানা গেছে, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন ডা. মঈন উদ্দিন। তিনি সিলেটের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী। গত ৫ এপ্রিল আইইডিসিআর থেকে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। গত ৩০ মার্চ থেকে তিনি তার বাসায় কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ৭ এপ্রিল সিলেট নগরের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা আইসোলেশনে সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here